এসবিএন অনলাইন ডেস্ক :স্পেনের নতুন রাজা হিসেবে আজ বৃহস্পতিবার শপথ নিতে যাচ্ছেন ষষ্ঠ
ফেলিপে। বাবা খুয়ান কার্লোসের দীর্ঘ ৪৯ বছরের শাসনের পর আজ দেশটির দায়িত্ব নিতে
যাচ্ছেন ফেলিপ। এ উপলক্ষে স্পেনের রাজতন্ত্রের ব্যতিক্রমী পাঁচটি ঘটনার কথা এখানে
তুলে ধরা হলো:
হুয়ান কার্লোসকে ফল নিক্ষেপ
১৯৬৯ সালে
জেনারেল ফ্রান্সিসকো ফ্রাঙ্কো হুয়ান কার্লোসকে তাঁর পরবর্তী উত্তরাধিকারী ঘোষণা
করেন। সেই অনুযায়ী তিনি ‘প্রিন্স অব স্পেন’ হন। ফ্রাঙ্কোর শাসনামলে হুয়ান
কার্লোস স্পেনের যেখানেই যেতেন, তাঁকে ফল ছুড়ে
মারা হতো। ১৯৭৫ সালের ২০ নভেম্বর ফ্রাঙ্কোসের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে এই বিরূপ
পরিস্থিতির অবসান ঘটে। তাঁর মৃত্যুর কিছুদিন পর স্পেনের রাজা হিসেবে অভিষেক ঘটে
কার্লোসের এবং তিনি দেশকে গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে নিয়ে যান।
জানা যায়নি যে রহস্য
১৯৫৬ সালে হুয়ান
কার্লোস যখন ১৮ বছরের তরুণ, তাঁদের বাড়ি
পর্তুগালের এস্তোরিওতে, তাঁর ভাই আলফোনসো
গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান, যা একটি দুর্ঘটনা
বলে জানানো হয়। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন হুয়ান কার্লোস। ওই সময় অবশ্য তাঁরা
দুই ভাই বন্দুক নিয়ে খেলা খেলছিলেন বলে জানা যায়। ওই দুর্ঘটনার আসল কারণ এখনো
পরিষ্কার নয়।
পোষা ভালুককেহত্যা
২০০৬ সালে রাশিয়ায় সফর করেন
হুয়ান কার্লোস। একজন রুশ কর্মকর্তার অভিযোগ, সফরকালে দেশটির
উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ভোলোগদা এলাকায় শিকারে যান কার্লোস। ওই সময় তিনি ভদকা পান
করিয়ে একটি পোষা ভালুককে মাতাল করার পর গুলি ছুড়ে ওটাকে হত্যা করেন। রাশিয়ার
স্পেন দূতাবাসের মুখপাত্র অবশ্য এই অভিযোগকে ‘হাস্যকর’ বলে মন্তব্য
করেছিলেন
চাভেজকে চুপ করতে বলেছিলেন
২০০৭ সালের নভেম্বর। হুয়ান
কার্লোস ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হুগো চাভেসকে বলে বসেন, ‘আপনি চুপ করছেন না কেন?’ আইবেরো-আমেরিকান শীর্ষ
সম্মেলনে চাভেজ স্পেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী হোসে মারিয়া আজনারকে ‘ফ্যাসিবাদী’ বলে ভর্ত্সনা করেছিলেন। দৃশ্যত
কার্লোস খেপে গিয়ে এ কথা বলেন। এ ঘটনায় কার্লোসকে ক্ষমা চাইতে বলেন চাভেজ।
জাতীয় সংগীতে সুর মেলাবে না
কেউ
আজ পার্লামেন্টে ‘সংবিধান রক্ষার’ শপথ নেবেন দেশটির নতুন রাজা
ফেলিপ। এ সময় বেজে উঠবে জাতীয় সংগীত। কিন্তু কেউ এর সঙ্গে গলা মেলাবেন না। কেননা
স্পেনের জাতীয় সংগীত মার্চা রিয়েলের কোনো কথা নেই, কেবল সুর আছে।
১৯৭৫ সালে স্বৈরশাসক
ফ্রান্সিসকো ফ্রাঙ্কোর মৃত্যুর পর রাজ সিংহাসনের অধিকারী হন হুয়ান কার্লোস। দীর্ঘ
৪৯ বছরের শাসনামলের শুরুর দিকে রাজা হিসেবে কার্লোস জনপ্রিয় ছিলেন। তবে মেয়ে ও
জামাতার বিরুদ্ধে চলা দুর্নীতি-লুটপাটের অভিযোগে তদন্ত শুরুর পর থেকে তাঁর
মর্যাদাহানি ঘটে।
স্পেনের অর্থনৈতিক সংকট
চলাকালে দক্ষিণ আফ্রিকার দেশ বোতসোয়ানায় হাতি শিকারের মতো বিলাসী ও ব্যয়বহুল
সফরে যাওয়ায় স্প্যানিশ জনগণের অনেকেই তাঁর ওপর আস্থা হারায়। দেশে গণতন্ত্র
আনলেও তাঁর ও পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের দুর্নীতির অভিযোগে
রাজতন্ত্রবিরোধী হয়ে ওঠেন স্পেনবাসী। অবশেষে চলতি মাসের শুরুর দিকে পদত্যাগের
ঘোষণা দেন হুয়ান কার্লোস।