হেফাজুল করিম
রকিব, লন্ডন থেকে : রোববার লন্ডনে হয়ে গেলো বাঙালির প্রাণের উৎসব বৈশাখি মেলা। এদিন পূর্ব লন্ডনের ভিক্টোরিয়া পার্কে সৃষ্টি হয়েছিলো প্রবাসী বাঙালিদের বাঁধভাঙ্গা জোয়ার। ব্রিটেনসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে হাজার হাজার প্রবাসী বাঙালি অংশ নেন এ
মেলায়। আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও বাংলাদেশ থেকেও এসেছিলেন অনেকে। এ যেন শেকড়ের টানে একই মোহনায় সবার সামিল হওয়া।
এপ্রিলের মধ্যভাগে বাংলা নববর্ষ হলেও
সুন্দর আবহাওয়ার আশা ও টাওয়ার হ্যামলেটস নিবার্চনের জন্য লন্ডনে প্রতি বছর
মে
মাসে বৈশাখি মেলা উদযাপিত
হয়ে আসছিলো।
এবার এই মেলা অনুষ্ঠিত
হলো জুন মাসে। এ মেলায়
তারুণ্যের উচ্ছাসের সাথে সব
প্রজন্মের একাকার হওয়ার চেষ্টা
সৃষ্টি হয়েছিল এক ভিন্ন
মাত্রা। ঢাক-ঢোল,
হরেক রকমের বাদ্যি-বাজনা
আর
রঙ-বেরঙের
সাজপোশাক নিয়ে দিনব্যাপী জমজমাট
ছিল বিশ্ব-বাঙালির এই
মিলনমেলা। দীর্ঘদিন
পর
পরিচিত বন্ধুবান্ধব একে-অপরের সাক্ষাৎ পান মেলায়
।মেলা
যেন পরিণত হয় পশ্চিমা
ধারায় বেড়ে ওঠা প্রজন্মের
শেকড় মুখী হওয়ার একটি
উপলক্ষ্য। মেলা
প্রাঙ্গণে বসেছিলো বই, পেইন্টিং,
বাঙালি পোশাক-আশাক,বাচ্চাদের
খেলনা ইত্যাদি হরেক রকম
পণ্যের স্টল।
বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও
সাহিত্য সংগঠনও নিজেদের স্টল
নিয়ে বসেছিল মেলায় ।
বাঙালির সংস্কৃতি সমৃদ্ধ বলেই
আজ
এটি ব্রিটিশ মূলধারায় স্থান
করে নিয়েছে।
বাঙালির বৈশাখি মেলা আমাদের
কমিউনিটি ঐক্যকে আরও সুদৃঢ়
করেছে। শুধু
টাওয়ার হ্যামলেটসই নয়, এই
মেলা আজ ব্রিটিশ মূলধারার
কাছেও একটি সার্বজনীন উৎসবের
পরিচিতি পাচ্ছে বললেন আমাদের
সময়কে ব্রিটেনের শ্যাডো এডুকেশন
মিনিস্টার ও বাঙালি বংশোদ্ভূত
ব্রিটিশ এমপি রোশনারা আলী
।মেলার
মূল খরচ বহন করে
টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল। ব্রিটেনে যে
কয়েকটি উৎসবকে মূলধারায় স্বীকৃতি
দেওয়া হয় বৈশাখি মেলা
তারই একটি।
এই
মেলার মাধ্যমে বাংলার সাংস্কৃতিকে
বাচিয়ে রাখার চেষ্টা করা
হয়
বললেন মেলার আয়োজক সিরাজ হক মেলা
চলাকালীন পূরো সময়ই ভিক্টোরিয়া
পার্কের মূল মঞ্চে চলে
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে কিংবদন্তী
সঙ্গীত শিল্পী কুমার শানুসহ
খ্যতিমান শিল্পীরা অংশ নেন। গানের ফাঁকে
মেলায় আগত প্রবাসী বাঙ্গালিদের
উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন ব্রিটেনের
শ্যাডো এডুকেশন মিনিস্টার ও
বাঙালি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপি
রোশনারা আলী সহ আরো
অনেকে । এদিকে, বিশাল
জনসমাগমকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশি
রাজনীতি প্রচারের চেষ্টাও লক্ষ্য
করা গেছে মেলায়। র্যাব বিলুপ্তির
দাবিতে বিএনপি’র যুক্তরাজ্য
শাখা মেলায় আগতদের মধ্যে
স্বাক্ষর ক্যাম্পেইন পরিচালনা করে।