![](https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhcB3rap_5U8OjMpI0yeOdnww-DD4PHXKCMhL9t2qR5n_5-gUHWZ1jDqv9E94XK5dDYdQWZwi8C42rH2opsfWC465yY7qbtqhBAIqdqB-l-tEhfkMu9EgqDqE5azPOYEk_plhMfCaQiUmE/s1600/10564595_722552517786488_1626966561_n_201481-300x199.jpg)
এসবিএন ডেস্ক.
রাজধানীর ওয়ারীর টিপু সুলতান
রোডে ছিনতাকারী সন্দেহে গণপিটুনিতে
সাজ্জাদুর রহমান রবিন (২৫)
নামে এক ডেকোরেটর ব্যবসায়ীর
মৃত্যু হয়েছে।
নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, পুলিশ
রবিনকে পরিকল্পিতভাবে ছিনতাইকারী সাজিয়ে
উত্তেজিত জনতার হাতে তুলে
দিয়েছে। পাশে
দাঁড়িয়ে রবিনের মৃত্যু যন্ত্রণা
উপভোগ করেছে পুলিশের কিছু
পাষণ্ড সদস্য।
রবিন ঘটনাস্থলের পাশে তার
বাবার ‘হৃদয় ডেকোরেটর’ নামে
একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান দেখাশোনা করতেন। তবে পুলিশের
দাবি, রবিবার বেলা ১১টার
দিকে টিপু সুলতান রোডে
জহির উদ্দিন নামে এক
বিকাশ কর্মীকে ছুরিকাঘাত করে
লক্ষাধিক টাকা ছিনতাইয়ের চেষ্টাকালে
উত্তেজিত লোকজন রবিনকে আটক
করে গণপিটুনি দেয়। এদিকে পুলিশ রবিনকে
ছিনতাইকারী বললেও গতকাল
ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে
নিহতের বাবা-মা, আত্দীয়-স্বজনসহ
এলাকাবাসী ঢাকা মেডিকেল কলেজেই
পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙ্গুল
তুলেছেন। নিহতের
স্বজনদের চেহারা ও পোশাক
পরিচ্ছদে দেখা গেছে আভিজাত্যের
ছাপ। ওয়ারীর
৬
নং
ব্রজহরি সাহা স্ট্রিটে নিহত
রবিনদের নিজের বাড়ি। পাঁচ বছর বয়সী
এক
কন্যা সন্তানের জনক রবিনের
স্ত্রী মণি আক্তার বর্তমানে
তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা। স্বামীর এমন
খবরে পাগলের মতো ছুটে
এসেছিলেন মর্গে।
রবিনের বাবা-মা ও
স্ত্রীর আহাজারিতে ঢামেক মর্গ
চত্বরের পরিবেশ যেনো ভারি
হয়ে উঠেছিল। বারবার বুক চাপড়ে
নিহতের বাবা সাইফুর রহমান
লিটন বলছিলেন, ‘আমার চোখের
সামনেই পুলিশ রবিনকে লোকজনের
হাতে তুলে দিল। ওরা নির্দয়ভাবে
আমার ছেলেরে মেরে ফেলল। পাশেই দাঁড়িয়ে
দাঁড়িয়ে এ দৃশ্য দেখছিল
পুলিশ। পুলিশ
পরিকল্পিতভাবে আমার ছেলের
এ
অবস্থা করল’।এক পর্যায়ে রবিনের
মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতালে
ছুটে আসা স্বজনরা পুলিশের
ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। বেলা সোয়া
একটার দিকে ওয়ারী থানার
উপপরিদর্শক আনোয়ার হোসেন
ও
এক
কনস্টেবলকে কিল-ঘুষি
মারেন ক্ষুব্ধ স্বজনরা। একপর্যায়ে বড়
হামলার আশঙ্কায় এসআই আনোয়ারসহ
ওয়ারী থানা পুলিশ তাদের
গাড়ি নিয়ে দ্রুত ঢামেক
হাসপাতাল ত্যাগ করেন। নিহতের একাধিক স্বজন
নাম প্রকাশ না করার
শর্তে অভিযোগ করেছেন, ওয়ারী
থানার ওসির নির্দেশে প্রতি
বছর থানার কিছু পুলিশ
সদস্য ঈদকে ঘিরে রবিনের
বাবা সাইফুর রহমান লিটনের
কাছে বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান
থেকে মোটা অঙ্কের টাকা
আদায় করত।
এবারও টাকা চাওয়া হলে
ব্যবসার পরিস্থিতি ভালো নয়
বলে সাইফুর পুলিশকে চাহিদা
অনুযায়ী টাকা দেননি। সে কারণে
থানার ওসিসহ কয়েকজন পুলিশ
কর্মকর্তা সাইফুরের ওপর ক্ষুব্ধ
ছিলেন। ওয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত
কর্মকর্তা (ওসি) তপন চন্দ্র
সাহা অভিযোগ অস্বীকার করে
বলেন, রবিন একজন পেশাদার
ছিনতাইকারী।
রবিবার বেলা ১১টার দিকে
টিপু সুলতান রোডে জহির
নামে বিকাশের এক বিক্রয়
প্রতিনিধি হেঁটে দোকানে দোকানে
টাকা সংগ্রহ করছিলেন। এ সময়
ওই
স্থানে তিন-চারজন ছিনতাইকারী
তার টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে
নেওয়ার চেষ্টা করে। জহির তার
ব্যাগটি টেনে ধরলে ছিনতাইকারীরা
তার দুই হাতে ছুরিকাঘাত
করে। জহির
চিৎকার শুরু করলে আশপাশের
লোকজন এসে রবিনকে ধরে
গণপিটুনি দেয়।
পরে পুলিশ ও স্বজনরা
রবিনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে
নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা
করেন। ছিনতাইয়ের শিকার জহির
উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, বেলা
১১টার দিকে হেঁটে চলার
সময় দুজন ছিনতাইকারীর শিকার
হয়েছিলেন। তারা
টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়ার
জন্য ছুরিকাঘাত করে। তিনি চিৎকার
দিলে লোকজন এসে একজনকে
ধরে মারপিট করে। তবে সেই
দুই ছিনতাইকারীর একজন নিহত
রবিন কিনা তা তিনি
নিশ্চিত নন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
কয়েকজন এলাকাবাসী এ প্রতিবেদককে
বলেন, রবিন সচ্ছল পরিবারের
সদস্য তার ছিনতাই করার
প্রশ্নই আসে না। এলাকায়ও তার
সুনাম রয়েছে।
দুই ভাই দুই বোনের
মধ্যে লিটন ছিলেন বড়। তাদের গ্রামের
বাড়ি মানিকগঞ্জের সিংগাইরে।