গাজায় ফিলিস্তিনিদের হাতে আটক ইসরাইলি সৈনিকটি দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোশে ইয়ালুনের কাজিন (চাচাত ভাই)। ইসরাইল হুঙ্কার দিয়েছে, ওই সৈন্যকে ফিরিয়ে না দেয়া হলে গাজাকে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়া হবে। শুক্রবার ইসরাইলিরা রাফায় সুড়ঙ্গ ধ্বংস করার সময় ফিলিস্তিনিরা তাকে আটক করে। তবে ফিলিস্তিনি কোনো পক্ষ এখন পর্যন্ত তাকে আটক করার কথা স্বীকার করেনি। যুদ্ধবিরতি ভেঙে গাজায় ব্যাপক হামলা শুরু করার অল্প পরই ইসরাইল তাদের সৈন্য নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাটি প্রকাশ করে। ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর উদ্ধৃতি দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, গাজার একটি সুড়ঙ্গ ধ্বংসের সময় ওই ইসরাইলি সৈন্য নিখোঁজ হয়ে যায়। তাকে কোনো গ্রুপ আটক করেছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
ইসরাইলি সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, সন্ত্রাসীরা এক সৈন্যকে অপহরণ করেছে। ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী গোয়েন্দারা ওই সৈন্যকে উদ্ধারে ব্যাপক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’ সেকেন্ড লে. পদমর্যাদার ওই সৈনিকের নাম হাদার গোল্ডিন (২৩)। ইসরাইলি বাহিনী ধারণা করছে, হামাস তাকে আটক করেছে। সেকেন্ড লে. গোল্ডিনের পরিবার অনেক বছর ধরে ক্যাম্ব্রিজে বাস করছে। জাতিসঙ্ঘ জানিয়েছে, মিসর সীমান্ত-সংলগ্ন রাফায় ইসরাইলের দুই সৈন্য নিহত হয়েছে। সৈন্য আটকের ঘটনাটি ওই সময়েই হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। গাজার প্রধান রাজনৈতিক ও সামরিক শক্তি হামাস আটকের এই ঘটনাটি স্বীকার বা অস্বীকার কোনোটাই করেনি বলে আলজাজিরা জানিয়েছে।
হামাস অবশ্য জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি থেকে সরে আসার একটি অজুহাত হিসেবে ইসরাইল তাদের সৈন্য নিখোঁজ হওয়ার কথা প্রচার করছে। ইসরাইলের চলতি আক্রমণকালে এর আগেও হামাস এক ইসরাইলি সৈন্যকে আটক করার দাবি করেছিল। ইসরাইল প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে স্বীকার করেছে, তাদের এক সৈন্য নিখোঁজ রয়েছে। তবে ওই সৈন্য জীবিত নাকি মৃত তা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। গাজায় অভিযানের সময় ফিলিস্তিনিরা যাতে কোনো ইসরাইলি সৈন্যকে আটক করতে না পারে, সেদিকে তীক্ষè নজর রাখছিল ইসরাইল। তারা ন্যূনতম আশঙ্কা সৃষ্টি হলেই পুরো এলাকা গুঁড়িয়ে দিচ্ছিল। ২০০৬ সালে ফিলিস্তিনিরা গিলাদ শালিত নামের এক ইসরাইলি সৈন্যকে আটক করেছিল। তারা তাকে ২০১১ সালের নভেম্বর পর্যন্ত পাঁচ বছর নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছিল। পরে এক হাজার ফিলিস্তিনির মুক্তির বিনিময়ে তাকে ছাড়া হয়েছিল। তবে ইসরাইল পরে মুক্তি দেয়া ফিলিস্তিনিদের আবার আটক করেছিল। এবারের যুদ্ধবিরতির জন্য হামাস যেসব শর্ত দিয়ে আসছে, তার একটি হলো ওইসব ফিলিস্তিনির মুক্তি নিশ্চিত করা।