মুজিব ও তার ড্রাইভাকে 'অপহরণ' বিষয়ে তাদের দুই জনের দেয়া তথ্যের মধ্যে যথেষ্ঠ গড়মিল থাকায় এবং আরো বেশ কিছু বিষয় পর্যবেক্ষণের জন্য মুজিবুর রহমানকে নিয়ে পুলিশ সিলেটের টুকেরবাজারের দিকে রওয়ানা হয়েছে আজ বেলা ১২ টার দিকে। যে স্থান থেকে মুজিব 'অপহৃত' হয়েছিলেন সেখানের উদ্দেশ্যে পুলিশের বিশেষ টিম বেলা সোয়া ২টা দিকে তাকে নিয়ে আসছে। এই টিমের নেতৃত্বে রয়েছেন সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার হারুনূর রশীদ। বেলা সোয়া ২টা পর্যন্ত টিমটি ঘটনা স্থলে পৌঁছে নাই।
প্রবাসী মুজিব ও তার ড্রাইভার সোহেলকে গত সোমবার সকালে ঢাকার টঙ্গীর নিকট 'অপহরণ কারীরা' চোখ বাঁধা ও বোরখা পড়া অবস্থায় ছেড়ে গেলে তারা মুক্ত হন। পরে মুজিব তার এক আত্মীয়ের সহযোগিতায় ঢাবার ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হন। এর পর পুলিশের ৬ সদস্যের একটি বিশেষ টিম সুনামগঞ্জ থেকে এ দিনই ঢাকায় পৌঁছে। এই টিমের নেতৃত্বে ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হেমায়েতুল ইসলাম।
এরই মধ্যে ড্রাইভারকে খুঁজে না পাওয়ায় সর্বত্র আলোড়ন সৃষ্টি হয় এবং নানা কৌতুহলের জন্ম দেয়। এক পর্যায়ে পুলিশ জানায় ড্রাইভারকে তারা ঢাকায়ই খুঁজে পেয়েছে। পুলিশের এই বিশেষ টিম উদ্ধার হওয়া দুইজনকে নিয়ে বুধবার গভীর রাত সুনামগঞ্জে নিয়ে আসার পর পুলিশ সুপারের অফিসে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। রাতে গণমাধ্যম কর্মীরা প্রবাসী মুজিবকে তাদের অপহরণ বিষয়ে কিছু জানতে চাইলে- এসময় পলিশ জানায়, তিনি ক্লান্ত বিশ্রামের প্রয়োজন। অবশ্য এ সময় মুজিব গণমাধমের ভূমিকার প্রশংসা করেন। এরপর মুজিবের হাজিপাড়াস্থ বাসায় নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। সেখানে তিনি পুলিশের নজরদারীতে ছিলেন ।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ সুপার হারুনুর রশীদ তার অফিসে গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, ঘটনাস্থলগুলো মুজিবকে নিয়ে পরিদর্শনের পর দুই-এক দিনের মধ্যে তাকে আদালতে তোলা হবে।
তিনি বলেন, মুজিবুর ও গাড়ি চালক সোহেলকে পৃথক ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে দুই জনের দেয়া তথ্যের মধ্যে বিস্তর ফারাক পরিলক্ষিত হয়েছে। মুজিব অপহরণ হয়েছেন তার এই দাবির সত্যতা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পুলিশ সুপার মো. হারুন অর রশীদ বলেন, আপতত দৃষ্টিতে আমাদের অনেকগুলো বিষয়ই রহস্যজনক বলে মনে হচ্ছে। সবদিক যাচাই বাছাইয়ের পর অনেক কিছুই পরিস্কার হয়ে আসবে।
এদিকে, বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেটের উদ্দেশ্যে যাত্রা করার পূর্বে মুজিবকে দেখতে তার বাসায় যান জেলা বিএনপির আহ্বায়ক নাছির উদ্দিন চৌধুরী ও প্রথম সদস্য কলিম উদ্দিন মিলন। পরে কলিম উদ্দিন মিলনের গাড়িতে করে মুজিবকে পুলিশ সুপারের অফিসে নিয়ে আসে পুলিশ। এ সময় নাছির উদ্দিন চৌধুরী ও সাবেক এমপি কলিম উদ্দিন মিলন বলেন, আমাদের আন্দোলনের ফসল হিসেবে মুজিবকে অক্ষত অবস্থায় ফেরৎ পেয়েছি।