এসবিএন ডেস্ক : আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, ক্ষমতায় থাকতেও তারা (বিএনপি) বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানানোর চেষ্টা করেন, ক্ষমতায় না থাকলেও তাদের সেই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকে। জীবনপ্রাণ লড়াই করবো, তবুও তাদের ক্ষমতায় আসতে দেব না। যতদিন দেহে আছে প্রাণ এ জঞ্জাল সরাবই। রোববার বিকেলে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে সংগঠনের এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। ১৭ আগস্ট সারাদেশে সিরিজ বোমা হামলা দিবস উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ।খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে মতিয়া বলেন, আপনার পেয়ারে পাকিস্তান ডুবছে। আরও ডুববে। কিন্তু আমরা তা চাই না। তারা যে খেলায় মাতছে, সেই খেলায় কখনো আওয়ামী লীগ পড়বে না, খেলবে না। আপনার দলই এ খেলায় পড়বে। তিনি বলেন, এদেশে যার যার ধর্ম তার তার কাছে। এখানে কেউ নিপীড়ক হবে না। ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার। ১৫ আগস্ট খালেদা জিয়া জন্মদিন পালনের কঠোর সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের এই নেত্রী বলেন, বিকৃত মানসিকতা নিয়ে তিনি নকল জন্মদিন পালন করে আসছেন। আমাদের অত্যন্ত সজ্জন ব্যক্তি সৈয়দ আশরাফ অনুরোধ করে মানা করলেন। কিন্তু চোরায় না শুনে ধর্মের কাহিনী। বৈধ জন্মদিন হলে একটা হয়। আর ডাস্টবিনের তোয়ালে পেঁচানো শিশুর একাধিক জন্মদিন থাকতে পারে। শক্তিধর দেশের সমালোচনা করে মতিয়া চৌধুরী বলেন, আপনারা এর বিরুদ্ধে ওর বিরুদ্ধে একে ওকে লেলিয়ে দেন। মধ্যপ্রাচ্যে আপনারা কী করতেছেন, সেটা আমরা দেখতেছি। কিন্তু এদেশে শেখ হাসিনা যতদিন বেঁচে থাকবে, এই চক্রান্ত সফল হতে দেওয়া হবে না।একই অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, খালেদা জিয়া চেয়েছিলেন, বাংলাদেশে তালেবান-আল কায়দার মত জঙ্গিগোষ্ঠী গড়ে তুলতে। এরই ধারাবাহিকতায় ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করা হয়। ১৭ আগস্ট দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলা সম্পর্কে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জানতেন। খালেদা জিয়া শুধু জানতেনই না, যারা বোমা হামলা করেছে তাদের পূর্ণ সহায়তাও করেছেন। বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে সৈয়দ আশরাফ বলেন, হুমকি-ধামকি দিয়ে লাভ নাই। ওটা হুমকি পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকবে। তিনি বলেন, ফখরুলের সামনে মূলা ঝুলাইয়া রাখা হয়েছে। এটা একটা জাহাজের গল্পের মত। এই লড়িছ না তোরে সারেং বানাব। কিন্তু ফখরুল সাহেবকে সারেং বানানো হবে না। তার (খালেদা জিয়া) ছেলে দেশে না আসা পর্যন্ত কাউকেই মহাসচিব করা হবে না। তারেক দেশে এলে মা হবে চেয়ারম্যান, ছেলে হবে মহাসচিব। বিএনপি ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ফখরুলকে কটাক্ষ করে সৈয়দ আশরাফ বলেন, তার সঙ্গে আমার অনেক রাজনৈতিক আলাপ হয়। তিনি একজন ভদ্রলোক মানুষ। ফখরুলের জন্য দুঃখ হয়। তার জন্য কষ্ট পাই। তিনি কীসের আসায় এতো দৌড়াদৌড়ি করেন? আপনি যতই দৌড়াদৌড়ি করেন না কেন, কোনো লাভ হবে না। খালেদা ও তার ছেলে আপনাকে কিছুই দেবে না। তারেক রহমান দেশে এলে সেই হবে বিএনপির মহাসচিব। এর আগে কাউকে বিএনপির মহাসচিব করা হবে না। জিয়া বঙ্গবন্ধু হত্যায় জড়িত মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, জিয়ার উদ্দেশ্য ছিল বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবার হত্যা করে আরেকটা রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তোলা। দুর্ভাগ্য খালেদা জিয়ার। সেদিন শেখ হাসিনা ও রেহানা বিলাতে থাকায় জিয়ার ওই অভিলাশ একশ ভাগ বাস্তবায়ন করতে পারেনি। তিনি বলেন, কোনো দিন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসতে পারলে আবারও বাংলাদেশকে সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য বানাতে পারে। সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে, যাতে তারা কোনোভাবেই আর ক্ষমতায় আসতে না পারে। আওয়ামী ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি ঐক্যবদ্ধ থাকলে তারা আর ক্ষমতায় আসতে পারবে না। নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, নগরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. সেলিম এমপি, খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, সাঈদ খোকন, ছাত্রলীগের সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ প্রমুখ।