এসবিএন ডেস্ক. ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র
মোদি আগামী
বিজয় দিবসে
ঢাকা থাকার
আগ্রহ প্রকাশ
করেছেন।
সে হিসেবে
১৬ ডিসেম্বর
বা তার
আগের দিন
তিনি ঢাকা
সফরে আসতে
পারেন।
কলকাতার বর্তমান
পত্রিকা এ
খবর জানিয়েছে। সূত্র আরো জানায়, সফরের
আগেই বাংলাদেশের
মানুষের জন্য
উপহার হিসেবে
লোকসভার শীতকালীন
অধিবেশনে ‘স্থলসীমান্ত চুক্তি’ (এলবিএ) অনুমোদন
দিয়ে সংবিধান
সংশোধনের প্রস্তাব
পাস করতে
চেষ্টা করবে
বিজেপি।
নয়াদিল্লিতে বিজেপি সরকারের ঘনিষ্ঠ একটি
সূত্র বুধবার
এ তথ্য
জানায়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী দক্ষিণ
এশিয়ায় নিকট
প্রতিবেশী দেশগুলো সফরের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন
করছেন।
তার সফর
তালিকায় ভুটান
ও নেপালের
পর রয়েছে
বাংলাদেশের নাম। ভুটান দিয়ে
শুরু হওয়া
সফরের পর
তিনি নেপাল
সফর করেন। সূত্রের খবর,
এরই ধারাবাহিকতায়
তিনি এরপরই
বাংলাদেশ সফরের
আগ্রহ দেখান। তবে
বাংলাদেশ সফরের
ব্যাপারে বিজেপি
সরকারের নীতিনির্ধারকদের
মধ্যে কিছুটা
দ্বিমত রয়েছে। কারণ
ভুটান বা
নেপালের সঙ্গে
ভারতের উল্লেখ
করার মতো
তেমন কোনো
বিরোধ নেই। উপরন্তু
তিনি নেপালের
মানুষের জন্য
ভারত সরকারের
এক বিলিয়ন
ডলার ঋণের
ঘোষণা দিয়েছেন
যেমনটি গত
২০১০ সালে
ভারতের তৎকালীন
কংগ্রেস নেতৃত্বের
জোট সরকারের
তরফ থেকে
বাংলাদেশকে দেয়া হয়েছিল।তাই
ভুটান বা
নেপালের পরিস্থিতির
সাথে বাংলাদেশের
প্রেক্ষাপট মিলবে না বলে মোদিকে
তার উপদেষ্টা
ও মন্ত্রীরা
জানান।
সে হিসেবে
বাংলাদেশের সঙ্গে অমীমাংসিত বিষয়গুলো সামনে
চলে আসবে। এ
কারণে অমীমাংসিত
বিষয়ের সমাধানের
মাধ্যমে বিজয়
দিবসের দিন
ঢাকা সফর
ভারত-বাংলাদেশের
সম্পর্ককে নতুন করে এগিয়ে নেয়ার
একটি লক্ষ্যমাত্রা
নিয়েছেন মোদি। তিস্তা চুক্তি
ও স্থলসীমান্ত
চুক্তি গত
কয়েক বছর
ধরেই দুই
দেশের মধ্যে
একটি অস্বস্তির
কারণ হিসেবে
রয়েছে।
এর মধ্যে
মোদি সরকারের
পক্ষে সরকারি
সমাধান সম্ভব
এমন বিষয়
হলো স্থলসীমান্ত
চুক্তি অনুমোদন। ১৯৭৪
সালের ওই
চুক্তি এবং
২০১১ সালের
সই হওয়া
এ সম্পর্কিত
প্রটোকল অনুমোদনের
জন্য ভারতের
সংবিধান সংশোধনের
প্রয়োজন রয়েছে। বিজেপির
মতো একক
সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকারের পক্ষে সংবিধান সংশোধন
করতে কোনো
সমস্যাই হবে
না।কিন্তু আসাম
রাজ্য বিজেপি
ও তাদের
সমমনা দলগুলোর
এই চুক্তি
নিয়ে কিছু
আপত্তি রয়েছে। তবে
আগামী দু-এক মাসের
মধ্যেই এসব
বিষয় নিয়ে
দল ও
দলের বাইরে
আলোচনা করে
একটি গ্রহণযোগ্য
সমাধানে পৌঁছানোর
লক্ষ্য নির্ধারণ
করা হয়েছে। বিজেপির
শীর্ষ নেতৃত্ব
আশা করছে,
সবকিছু ঠিক
থাকলে নভেম্বরের
শেষ বা
ডিসেম্বরের প্রথমার্ধের শীতকালীন অধিবেশনে চুক্তিটি
অনুমোদন করে
সংবিধান সংশোধন
করা সম্ভব
হতে পারে,
যা হবে
বাংলাদেশের জন্য মোদি সরকারের একটি
দৃশ্যমান উপহার। যদিও
তার আগেই
নরেন্দ্র মোদির
বাংলাদেশ সফরের
প্রস্তুতি শুরু হয়ে যাবে। নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র
মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ-মায়ানমার অনুবিভাগের একজন
কর্মকর্তা জানান, নরেন্দ্র মোদি ভারতের
১৪তম প্রধানমন্ত্রী
হিসেবে প্রথম
রাষ্ট্রীয় সফরের জন্য ঢাকা যাওয়ার
কথাও এক
সময় শোনা
গেছে।
গত ১৮
মে মোদির
সঙ্গে শেখ
হাসিনার টেলিফোনে
কথোপকথনে ঢাকা
সফর এবং
দুই দেশের
অমীমাংসিত ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়। বাংলাদেশের সঙ্গে
দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে
যেতে নিজের
আগ্রহের কথাও
শেখ হাসিনাকে
জানিয়েছেন মোদি। নয়াদিল্লির কূটনৈতিক সূত্রের
দাবি, প্রতিবেশী
দেশগুলোর সঙ্গে
ভারতের বাণিজ্যিক
ও সুসম্পর্ক
স্থাপনে স্থলসীমান্ত
চুক্তির অনুমোদনের
পর মোদির
পদক্ষেপ হতে
পারে বাংলাদেশের
সঙ্গে তিস্তা
চুক্তি সই। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর
এই চুক্তিতে
আগে আপত্তি
থাকলেও এবার
যেহেতু কেন্দ্রে
বিজেপি একক
সংখ্যাগরিষ্ঠ দল এবং পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়নে
অর্থনৈতিক সহায়তা আগের চেয়ে বাড়িয়ে
দিয়ে মমতাকে
রাজিও করাতে
পারেন মোদি। এমনকি
পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে তিস্তার ভাগাভাগিতে সিকিমের
মুখ্যমন্ত্রীকেও রাজি করাতে পারেন প্রধানমন্ত্রী
মোদি। বিজেপি নেতা মোদির
নির্বাচনী প্রচারণার সময় ভারতে কথিত
অবৈধ বাংলাদেশিদের
বিতাড়নের ডাক
দেয়ায় বাংলাদেশ-ভারতের আগামী
দিনের সম্পর্ক
নিয়ে অনেকের
মধ্যেই শঙ্কা
দেখা দিয়েছিল। যদিও
মোদির নেতৃত্বে
সরকার ভারতের
পররাষ্ট্র নীতিতে তেমন পরিবর্তন আনবে
না বলে
বিভিন্ন সূত্রে
জানা যায়। বিজেপি
এক সময়
স্থলসীমান্ত চুক্তির ঘোর বিরোধিতা করলেও
পরে তারা
বিরোধিতার মাত্রা কিছুটা হলেও কমিয়ে
আনে; যার
কারণে গত
ফেব্রুয়ারিতে রাজ্যসভায় বিলটি উত্থাপিত হলে
বিজেপি তার
বিরোধিতা করেনি। এ
কারণে রাজ্যসভা
থেকে এখন
নবগঠিত লোকসভায়
বিলটি সহজেই
তোলার সুযোগ
তৈরি হয়েছে। ভারতের নির্বাচনে
ফল ঘোষণার
দিনই শুভেচ্ছা
জানিয়ে মোদিকে
উষ্ণ অভিনন্দন
বার্তা পাঠান
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর
পর ১৮
মে তিনি
সরাসরি টেলিফোনে
কথা বলেন
মোদির সঙ্গে। সেখানে
শেখ হাসিনা
বাংলাদেশকে মোদির ‘দ্বিতীয় বাড়ি’ মনে
হবে বলেও
মন্তব্য করেন
এবং ঢাকা
দিয়েই প্রথম
বিদেশ সফরের
আমন্ত্রণ জানান। ভারতের প্রধানমন্ত্রী
হওয়ার পর
মোদিকে প্রথম
বিদেশ সফর
হিসেবে ঢাকায়
আসার আমন্ত্রণ
জানিয়ে শেখ
হাসিনা বলেন,
‘বাংলাদেশের একজন মহান বন্ধুকে একটি
অসাধারণ বন্ধু
দেশ হিসেবে
বাংলাদেশ সফরে
দেখতে আমি
খুবই আনন্দিত
হব।
আমি আশা
করব, আমার
দেশ বাংলাদেশকে
আপনি নিজেদের
দ্বিতীয় দেশ
(সেকেন্ড হোম)
হিসেবেই মনে
করবেন, তাই
খুবই আনন্দের
সঙ্গে চাই,
আপনি প্রধানমন্ত্রী
হিসেবে প্রথম
বিদেশ সফর
ঢাকা দিয়েই
শুরু করবেন।’