এসবিএন ডেস্ক : কোলকাতায় আটক নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের আসামি নুর
হোসেনের বিনিময়ে আলফার সাধারণ সম্পাদক অনুপ চেটিয়াকে ভারতের হাতে তুলে দিচ্ছে
বাংলাদেশ সরকার। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রের বরার দিয়ে কোলকাতা
থেকে প্রকাশিত আনন্দ বাজার পত্রিকা এই খবর দিয়েছে। ‘খুনের আসামির বিনিময়ে দেশে ফিরছেন চেটিয়া’ শিরোনামের খবর বলা হয়েছে, “বন্দি বিনিময়ের
বিষয়ে দু’দেশের সরকার
বোঝাপড়ায় পৌঁছেছে। ভারতীয় হাইকমিশনের এক অফিসার কালই গাজিপুরের জেলে গিয়ে অনুপ
চেটিয়ার সঙ্গে দেখা করে এসেছেন। চেটিয়া তাঁদের জানিয়েছেন, আইনগত অসুবিধা না থাকলে ভারতে ফিরে যেতে
তিনি রাজি। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক সূত্র জানিয়েছেন, এর পরেই চেটিয়াকে জেল থেকে মুক্ত করে
ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।” প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “ঢাকার মোহম্মদপুরের
একটি বাড়ি থেকে ১৯৯৭ সালে অসমের জঙ্গি সংগঠন আলফার প্রধান নেতা অনুপ চেটিয়াকে
গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তার পরে অবৈধ অনুপ্রবেশ, জাল পাসপোর্ট ও অস্ত্র রাখার তিনটি মামলায় তাঁর সাত বছর কারাদণ্ড হয়।
২০০৭-এর ২৫ ফেব্রুয়ারি চেটিয়ার সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও তাঁকে নিরাপদ হেফাজতে
জেলে রেখে দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। ২০০৯-এ চেয়ারম্যান অরবিন্দ রাজখোয়া-সহ আলফার বেশ
কিছু প্রথম সারির নেতাকে গোপনে ভারতের হাতে তুলে দেয় শেখ হাসিনার সরকার।”
আনন্দবাজার লিখেছে,
“ভারত
সরকার তাঁদের সঙ্গে শান্তি আলোচনা শুরু করলে চেটিয়াও তা সমর্থন করে দেশে ফেরার
জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছে আর্জি জানান। কিন্তু আইনগত কিছু জটিলতায় বাংলাদেশ
চেটিয়াকে হস্তান্তর করতে পারেনি। তার পরে বন্দি প্রত্যর্পণ নিয়ে ভারত ও বাংলাদেশ
বেশ কিছু চুক্তিতে স্বাক্ষর করার পরে চেটিয়ার দেশে ফেরা শুধু সময়ের অপেক্ষা হয়ে
দাঁড়ায়। কাল ভারতীয় হাইকমিশনের কনসুলার জে পি সিংহ এক দোভাষীকে নিয়ে গাজিয়াবাদ
কারাগারে চেটিয়ার সঙ্গে কথা বলেন। জেলারও সে সময়ে হাজির ছিলেন। চেটিয়া দেশে ফিরতে
চান কি না, তাঁর কাছে জানতে চান
সিংহ। জবাবে চেটিয়া বলেন, দেশে ফিরতে চেয়ে
তিনি ইতিমধ্যে বেশ কয়েক বারই বাংলাদেশ সরকারের কাছে আর্জি জানিয়েছেন। তাঁর আপত্তির
কোনও কারণ নেই।” প্রতিবেদনে আরো বলা
হয়েছে, “কয়েক মাস আগেই দমদম
বিমানবন্দরের কাছে একটি আবাসন থেকে ধরা পড়েন বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জের কাউন্সিলর নুর
হোসেন। সাত জনকে অপহরণের পরে খুন করে শীতলক্ষ্যা নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার ঘটনার প্রধান
আসামি তিনি। সাধারণ পরিবহণ কর্মী থেকে শাসক দল আওয়ামী লিগের প্রভাবশালী নেতা হয়ে
ওঠা নুর হোসেনকে বাংলাদেশ সরকার আদৌ ফেরায় কি না, তা নিয়ে জল্পনা সৃষ্টি হয়েছিল। বিরোধীদের অভিযোগ
ছিল, নুর হোসেন ফিরে এসে
কাঠগড়ায় দাঁড়ালে বাংলাদেশের শাসক দলের অনেক প্রথম সারির নেতাই ফেঁসে যেতে পারেন।
তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগাগোড়াই বলে আসছিলেন, নারায়ণগঞ্জে নিহতরাও শাসক দলের নেতা-কর্মী বা সমর্থক। এই খুনের বিচারে
রাজনীতির রং দেখা হবে না। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, নুর হোসেনকে দেশে ফেরানোর ক্ষেত্রে
খুঁটিনাটি বিষয় প্রায় চূড়ান্ত। ভারত সরকার শীঘ্রই তাঁকে বাংলাদেশের নিরাপত্তা
রক্ষীদের হাতে তুলে দেবে।”