Latest News

ঈদ গুলো আর ঈদের মত রইলো না


আজিম খান চৌধুরী : আমাকে পাত্তা না দিয়েই আমার বয়স বাড়ছে জীবনের পর্যায়ে এসে ছোট বেলার ঈদের দিন গুলোর কথা বেশি মনে হয় ছোট বেলার ঈদটাই আসল ঈদ দেশের বাইরে থাকায় ঈদের দিনে তার চেয়েও বেশি মনে হয় চির পরিচিত মানুষ এবং প্রিয় স্থান গুলোর কথা একসময় ঈদের দিন গুলোতে কিছু একটা পছন্দ মত কিনে ফেলা বা একটা কিছু করে ফেলাই ছিল মূল টার্গেট তখন ছোট ছোট অপ্রাপ্তি পুরো ঈদের আনন্দকে যেমন মাটি করে দিত আবার ছোট ছোট প্রাপ্তিতেও প্রাণ আনন্দে ভরে উঠত ঈদের নতুন পোশাক ঈদ আসা পর্যন্ত পরম যত্নে লোকিয়ে রাখা হত হচ্ছে ছোট বেলার কথা একটু বড় বেলায় পোশাক আসাকের চেয়ে বন্ধুদের আড্ডাই ছিল মুখ্য আর এখনতো একটু নিজের মত করে নিজের পরিবারকে সময় দেয়াটাই যেন ঈদ ঈদকে যে যেভাবে সজ্ঞায়িত করুক আমার কাছে ঈদ হচ্ছে মসলমানদের গ্রাজুয়েশন ডে আর গ্রেজুয়েশনের বিষয় আল্লাহর ভয় বা তাকওয়া কৌর্সটির মেয়াদ এক মাস এই একমাসে মসলমানদের প্রেকটিস করানো হয় কি ভাবে তার স্রষ্টার আনুগত্য করতে হয় গোটা রমজানে আমরা নিজেদের অন্তরের সঙ্গে যুদ্ধ করে অনেক হালাল জিনিস থেকেও বিরত থাকি, যেন পরের এগারটি মাস হারাম থেকে বেছে থাকতে পারি ঈদের দিন আল্লাহর পক্ষ থেকে মানুষের ক্ষমা পাওয়ার দিন যারা এই কথাটি মানেন তারা শত আনন্দের দিনেও স্রষ্টার অবাধ্যতায় লিপ্ত হয় না তাই আমাদের এই আনন্দের দিনটি থেকে অন্যদের আনন্দের দিনটির মাঝে রাত দিন পার্থক্য নিজেদের আনন্দের পাশাপাশি গরিব দুখী মানুষদের নিয়ে যেন সবাই ঈদের আনন্দ ভাগাভগি করতে পারে সেই বিষয়কেও প্রাধান্য দেয়া হয় এটাই প্রকৃত আনন্দ, অন্যের মুখে হাসি ফোটানোর মত আনন্দ দ্বিতীয়টি হয়না ঈদের দিন বিলাতে যে জিনিসটা আমার খুব খারাপ লাগে সেটা হলো কিছু উশৃঙ্খল তরুণ দামী গাড়ি ভাড়া করে রাস্তা ঘাটে খুবই বেপরুয়া গাড়ি চালায় বাকিটা নাইবা বললাম ৷ 

এদের সম্পর্ক শুধু আনন্দের সঙ্গে, ধর্মের সঙ্গে এদের সম্পর্ক খুবই কাঁচা প্রতি ঈদেই কম করে হলেও দুই চারটা দুর্ঘটনা ঘটে তা দেখে ননমুসলিমদের মনে মসলমান সম্পর্কে খারাপ ধারণা জন্ম নেয় এর উল্টাটাও দেখি, কিছু মানুষ এত ভালো ভাবে পরিবর্তন হয়, যা আমাকে ভালো মানুষ হতে দারুন উৎসাহিত করে এধরনের মানুষের জন্য নিজের সমস্থ ভালোবাসা উজার করে দিতে ইচ্ছে হয় এবারের ঈদ ফিলিস্তিনি মুক্তিকামি মানুষের জন্য যদিও ম্লান হয়ে আছে, তার পরও ঈদের দিন তো ঈদের দিন মানুষকে মুখে হাসি নিয়ে ঈদ মোবারক বলতে হয় কথায় আছে, জোর করে কারো ভালবাসা অর্জন করা যায় না জোর করে আরো কত কিছইতো হয় না জোর করে কারো মনের খুশি নিয়ে আসা যায় না ইজরাইলের নির্মম পৈচাশিকতা দেখে ঈদ মানে যে খুশি, ঈদ মানে যে আনন্দ সেটা ভুলেই বসে আছি কেউ আনন্দ উপভোগ করে আনন্দ পায় কেউ নিজের আনন্দ অন্যকে বিলিয়ে আনন্দ পায় আর কেউ ত্রাস সৃষ্টি করে- নির্মম ভাবে মানুষ মেরে আনন্দ পায় সন্ত্রাসের অজুহাতে হাজার হাজার নিস্পাপ বাচ্চা, নিরস্র মানুষ হত্যা; এরচেয়ে বড় কৌতুক আর কি হতে পারে কেউ যদি আমার পেছনে পিস্তল ঠেকিয়ে বলে তোকে মজার একটি কৌতুক বলতে হবে তাহলে আমাকে খানিক চিন্তা করতে হবে, কোন কৌতুকটি আগে বলবো আমাকে এমন কৌতুক বলতে হবে যা শুনে পিস্তল ওয়ালার কাতু কুতু শুরু হয় আর হাত থেকে পিস্তল পরে যায় তা নাহলে বিপদ পিস্তল দেখিয়ে আরো কত কিছু করাতে চাইবে আজ যাদের হাতে ক্ষমতা তাদেরই ঈদ বাকিদের মনে প্রতিহিংসা আর ক্ষোভ জমে থাকুক কঠিন বিপদে মাটি কামড়িয়ে পরে থাকার নামই ধৈর্য ফিলিস্তিনিরা সেই ধর্যের পরিচয় দিচ্ছেন আল্লাহ যেন তাদের শক্তি ধৈর্য আরো বাড়িয়ে দেন ভেদাভেদ ভুলে পৃথিবীর সমস্থ মসলমানদের মধ্যে ঐক্য দান করেন মসলমানরা এক না হওয়া পর্যন্ত এত বড় বড় অন্যায় মসলমানদের মেনে নিতে হবে চার পাঁচ বছরের একটা বাচ্চাকে যদি বলেন ঈদ কি জিনিস সে তার প্রিয় খেলনা জামা অথবা প্রিয় জিনিসটি সম্পর্কে আগে বলা শুরু করবে টিনেজারদের কাছে প্রশ্নটি করেন দেখবেন ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বন্ধুদের আড্ডার কথা নিয়ে আসবে তেমনি বড়রা বড়দের মত, আর মেয়েরা মেয়েদের মত উত্তর দেয় ফিলিস্তিনি একটা বাচ্চা, ছোট্ট মেয়ে কিংবা টিনেজারদের সেই সুযোগটুকু নেই বহু বছর তারা নিজেদের দেশে নিজেরা পরবাসী হয়ে আছে এটি মোটেও এমন একটি বিষয় নয় যে অল্প কিছু ইজরাইলি তাদের নিজেদের শক্তি দিয়ে দেশটি দখল করে বসে আছে, বরং ব্রিটেন এমেরিকার মত দেশ এর সুযোগ করে দিয়েছে লক্ষ লক্ষ মসলমানদের তুলনায় তাদের সংখ্যা এতই কম, মসলমানরা এই দেশটার উপর দিয়ে হেটে গেলেই তারা মাটির সঙ্গে মিশে যেত দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তারা আগে থেকেই মুসলমানদের রাষ্ট্র নেতাদের হাত করে রেখেছে এত বড় অন্যায় হওয়া সত্বেও আরব দেশ গুলোর নেতার টু শব্দটাও করছেনা ইউরুপ এমেরিকাও নিশ্চত তারা করবেনা, সত্যিকার অর্থে তারা নিশ্চিত না হয়ে কোনো কাজে হাত দেয় না আমার কাছে একটা প্রশ্ন জাগে আমাদের দেশে একটা ক্রান্তি কাল ছিল আর সেটা ১৯৭১ সেই বছরটাতে আমাদের অগ্রজরা কিভাবে ঈদ করেছিলেন ? তখনকার মানুষকে জিগ্গেস করলে সবাই আনন্দের পরিবর্তে দুঃসহ মর্মপরশী অথবা সাহসিকতার গল্প বলা শুরু করবে যাদের সবকিছু মনে আছে নিশ্চই সেই ভয়ের ঈদ এখনো দু:সপ্নের মত অন্তরে গেথে আছে আজ যারা ফিলিস্তিনের বাসিন্দা তাদের অবস্থা তার চেয়েও মারাত্মক ভয়াবহ কার ঘরে কখন বোমা পরে বলা মুশকিল সেই চিন্তা সারাক্ষণ যাদের মাথায় ঘুরে তাদের মাথায় অন্তত ঈদের আনন্দ কাজ করবেনা তার পরও আমাদের অবাক করে দিয়ে তারা রোজা রাখছে, নিশ্চই ঈদও পালন করেছে সেই ঈদের দিনে সদ্য প্রয়াত প্রিয়জনদের জন্য মাবুদের কাছে দুয়া করেছে ঈদ জামাতকে লক্ষ্য করে ইসরাইল বাহিনী বোমা ছেড়েছে ঈদের দিনেও তারা লাশ হয়ে ঘরে ফিরেছে শুধু মসলমান না মানুষ হিসাবে বলছি, এসব দেখে নিজের খুশি নিয়ে ব্যস্ত হয়েপরাটা আমার কাছে কেন জানি অমানবিক মনে হয় তাই আমি বলি বিগত কয়েক বছরের ঈদ মনখারাপ করার মত ঈদ আফগানিস্থান, মায়ানমার, ইরাক, সিরিয়া, বসনিয়া প্রতিটা দেশেই আজ মসলমানরা নির্যাতিত কখন যে আমাদের উপর শুরু হয় বলা মুশকিল মানবাধিকার সংস্থা গুলোও আমাদের না তাই তারা আমাদের কথা বলেনা, বলবেও না আল্লাহ যেন পৃথিবীর সমস্থ মসলমানদের জন্য প্রতিটি দিন ঈদের দিনের মত করে দেন পৃথিবীর আনাচে কানাচে নির্যাতিত মসলমানদের জন্য যেন নতুন একটা দিগন্ত উন্মোচন করে দেন, পৃথিবীর সব ভালো মানুষ গুলো এক হয়ে যেন নতুন একটি বিপ্লবের সুচনা করে, আল্লাহ যেন সেই শক্তি দান করেন


যোগাযোগ

Editor:Sahadul Suhed, News Editor:Loukman Hossain E-mail: news.spainbangla@gmail.com