এসবিএন ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিগগিরই বাংলাদেশ ও
ভারতের মধ্যে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি করতে নয়াদিল্লির প্রতি
আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, শুকনো মৌসুমে
বাংলাদেশের আরো পানির প্রয়োজন হওয়ায় তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি খুব শিগগিরি হওয়া
উচিত। আজ (শনিবার) রাতে গণভবনে ঢাকা সফররত ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
জেনারেল (অব.) ভি কে সিং-এর নেতৃত্বাধীন একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠককালে তিনি
এ মন্তব্য করেন। বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সেক্রেটারি একেএম শামীম চৌধুরী
সাংবাদিকদের জানান, বৈঠকে ভারতের
উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য এবং বাংলাদেশের মধ্যে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন
বিষয়, বিশেষ করে বাণিজ্য ও
বিনিয়োগ নিয়ে উভয়পক্ষ আলোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী ভারতের সঙ্গে তিস্তার পানি বণ্টন
এবং সীমানা চুক্তিসহ সকল বিষয় খুব শিগগির সমাধানের স্বাক্ষরের ব্যাপারে আশা প্রকাশ
করেন। একেএম শামীম চৌধুরী
আরো বলেন, শেখ হাসিনা ট্রানজিট
সম্পর্কে ভারতের উপর দিয়ে নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশকে ট্রানজিট সুবিধা
প্রদানের জন্য ভারত সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছেন। তিনি ভারতের মন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, আমরা আপনাদের কাছ থেকে ট্রানজিট চাই এবং
এজন্য আমরা ইতোমধ্যেই আপনাদেরকে সুবিধা দিয়েছি। জবাবে ভারতের প্রতিমন্ত্রী সিং
বলেন, আমরা ভারতের মাটি
ব্যবহার করে বাংলাদেশকে ট্রানজিট দিতে সম্মত আছি। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে
বলেন, হ্যাঁ আপনারা এই
সুবিধা পাবেন। একইসঙ্গে ভি কে সিং বলেন, নেপাল ও ভুটানের সাথে বাংলাদেশের সড়ক যোগাযোগের পাশাপাশি রেলপথও
নির্মাণ করতে হবে। তিনি প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে বিরাজমান ওয়াটার প্রটোকল আরো
শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, আগামী নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠেয় নৌ-পরিবহন
সচিব পর্যায়ে বৈঠকে এই বিষয়টি আলোচনা হতে পারে। বৈঠকে ভিকে সিং
আশুগঞ্জ বন্দর ব্যবহার করে ভারতীয় জাহাজে ত্রিপুরায় চাল নিতে দেয়ার অনুমতির জন্য
প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। পণ্য পরিবহনের জন্য ভারত সরকার আখাউড়া থেকে আগরতলা
পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার রাস্তা করবে বলেও জানান ভারতের প্রতিমন্ত্রী।ভি কে সিং বলেন, আমরা ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো
এবং বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাই। তিনি
বলেন, সীমান্ত হাট দু’দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি করেছে।ভারতের
নতুন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফর সম্পর্কে ভি কে সিং বলেন, তার দেশের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরে
আসতে আগ্রহী এবং যে কোন সময়ে তিনি বাংলাদেশ সফরে আসতে পারেন। শেখ হাসিনা এ
প্রসঙ্গে বলেন, বাংলাদেশের জনগণ
ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের বিশেষ করে সেদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয়
রাজ্যগুলোর সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেন। ভারতের প্রতিনিধি দলের সদস্যদের মধ্যে ভারতের
মেঘালয় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ড. মুকুল সাগমা, ত্রিপুরার শিল্পমন্ত্রী তপন চক্রবর্তী, মেঘালয়ের পার্লামেন্ট সেক্রেটারি কেনেডি খায়রিম, ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার পঙ্কজ
শ্যারন এবং বাংলাদেশ-ভারত চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি
মাতলুব আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।