.jpg)
সুফিয়ান আহমদ,নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বিয়ানীবাজারে ১২
বৎসরের এক নাবালিকা মেয়েকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে জোরপূবর্ক গণধর্ষণ করার খবর
পত্রিকায় ছাপা করায় স্থানীয় সাংবাদিকদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি করল ধর্ষণকারী
কুখ্যাত যুবলীগ ক্যাডার ও বহু কুকর্মের হোতা ধর্ষক মামুনুর রশিদ আকুল। ধর্ষক আকুল
এই খবরকে মিথ্যা আখ্যা দিয়ে সাংবাদিকদেরকেও দেখে নেয়ার হুমকি দেয়। তার হুমকি ও
গালাগালির বিষয়টি ইতিমধ্যে সিলেটের পুলিশ সুপারকে মৌখিকভাবে অবহিত করেছেন
বিয়ানীবাজার প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মিলাদ মোঃ জয়নুল ইসলাম। পুলিশ সুপার নুরে
আলম মিনা বিষয়টি আমলে নিয়ে তা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন এবং যেকোন মুল্যে ধর্ষক
যুবলীগ ক্যাডার আকুলসহ তার সহযোগীদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেন বিয়ানীবাজার থানা
পুলিশকে। এদিকে যুবলীগ ক্যাডার ধর্ষক আকুল বাহিনীর ভয়ে শনিবার রাতে ফেনগ্রাম
(ধর্ষণের স্থান) এলাকা ছেড়ে চলে গেছে ধর্ষিতার পরিবার এমন খবর পাওয়া গেছে স্থানীয়
সুত্রে। বহিরাগত হওয়ায় তাদেরকে এলাকা ছাড়ার হুমকি দেয় আকুল ও তার সহযোগীরা। তারা
এলাকা ছেড়ে না গেলে তাদের হত্যার হুমকিও দেয় আকুল বাহিনী। যার ফলে প্রাণ ভয়ে এলাকা
ছেড়ে চলে গেছে ধর্ষিতা শিশুটির পরিবার। তবে তারা কোথায় গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে
এসম্পর্কে কিছু জানা যায় নি। এলাকা ছেড়ে তাদের চলে যাওয়ার বিষয়টিও জানাতে পারেননি
বিয়ানীবাজার থানার অফিসার ইনচার্য আবুল কালাম আজাদ। তিনি বিষয়টি নিয়ে মামলার
তদন্তকারী কর্মকর্তা জহিরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগের পরামর্শ দেন এবং বরাবরের মতো
এবারও ধর্ষণকারী যুবলীগ ক্যাডার আকুলকে আটকের আশ্বাস দেন। এবিষয়ে জহিরুল ইসলামের
সাথে যোগাযোগ করলে তিনিও এবিষয়টি জানেননা বলে এ প্রতিবেদককে জানান। তিনি বলেন,
আমার মোবাইল নাম্বারটি তাদের কাছে দেয়া আছে। ধর্ষিতার
পরিবারকে বলেছি আর কোন সমস্যা হলে আমাকে জানানোর জন্য। কিন্তু তারা আমাকে কিছু
জানায়নি। এরপর ধর্ষিতার
পরিবারের মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদের মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। এব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে মুড়িয়া ইউপির
চেয়ারম্যান আবুল খায়ের জানান, শুনেছি যুবলীগ ক্যাডার
আকুলের ভয়ে ধর্ষিতার পরিবার এলাকা ছেড়ে চলে গেছে। বিষয়টি শোনার পর আমি তাদের সাথে
যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। অপরদিকে ধর্ষণের ঘটনায় মামলা হওয়ার পরও ধর্ষক আকুল নিজে প্রকাশ্যে বীরদর্পে
ঘোরাফেরা করছে বিয়ানীবাজারের ওলিতে গলিতে। মামলা থেকে মুক্তি পেতে ধরনা দিচ্ছে
স্থানীয় ক্ষমতাসীন নেতাদের কাছে। যার জন্য বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ ধর্ষক আকুলকে হাতের
নাগালের কাছে পেয়েও আটক করছে না। খবর নিচ্ছে না ধর্ষিতার পরিবারের। আর এসুযোগকে
কাজে লাগিয়ে ধর্ষিতার পরিবারকে এলাকা ছাড়া করে যুবলীগ ক্যাডার ধর্ষক আকুল ও তার
সহযোগীরা। তবে শেষ পর্যন্ত ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য জঘণ্য একাজ করেও বহু কুকর্মের হোতা
যুবলীগ ক্যাডার ধর্ষক আকুল কি পার পেয়ে যাবে নাকি আইনের আওতায় এনে তাকে
দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা হবে এপ্রশ্ন উপজেলার সচেতন নাগরিকদের? উল্লেখ্য, বিয়ানীবাজার উপজেলার মুড়িয়া ইউনিয়নের ফেনগ্রামের আতিকুর রহমানের কলোনীতে
বসবাসকারী ১২ বৎসরের একটি নাবালিকা মেয়েকে
গত সপ্তাহের রোববার অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে জোর পূর্বক গণধর্ষণ করে যুবলীগ ক্যাডার
আকুল ও তার সহযোগী খলিল। এদিন দুপুরে
কলোনীর অদূরে একটি পুকুরে গোসল করতে নামে নাবালিকা মেয়েটি। আর আগে থেকে
সেখানে ওঁৎ পেতে থাকা যুবলীগ ক্যাডার আকুল ও তার সহযোগী খলিল ধারালো অস্ত্রের ভয়
দেখিয়ে ওই নাবালিকাকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায় আকুলের বাড়ীতে। আর সেখানেই তারা
নাবালিকাকে উপর্যুপুরী ধর্ষণ করে। ধর্ষণ শেষে রক্তাক্ত নাবালিকা তার বাসায় গিয়ে
এসব কথা বলার পর তার পিতা ও এলাকাবাসীর সহায়তায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে নিয়ে আসা হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী
মেডিকেল কলেজের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টার (ওসিসি)তে প্রেরণ করা হয়। ধর্ষিতার
শরীরের বিভিন্ন স্থানে নখের আঁচড়ের চিহ্ন রয়েছে বলে জানান বিয়ানীবাজার স্বাস্থ্য
কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক। ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষিতার পিতা বাদী হয়ে বিয়ানীবাজার
থানায় মামলা দায়ের করেন। ধর্ষিতার নাবালিকা মেয়েটির পরিবার গত কয়েক বছর থেকে ওই
কলোনীতে বসবাস করে আসছে। তাদের মূল বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলায়। ধর্ষণকারী যুবলীগ ক্যাডার ও বহু কুকর্মের হোতা
মামুনুর রশীদ আকুল (৩২) ফেনগ্রামের মৃত ছিফত আলীর পুত্র ও খলিল আহমদ (৪০) একই
গ্রামের মৃত জোয়াইদ আলীর পুত্র ।
স্থানীয়ভাবে তারা এলাকায় যুবলীগ নেতা নামে পরিচিত।