Latest News

সরকার বিরোধী আন্দোলনে বিএনপির শক্তিসামর্থ্য প্রশ্নের মুখে



এসবিএন ডেস্ক : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশ এখন কঠিন সময় পার করছে। এ পরিস্থিতি উত্তরণে এবং গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার রক্ষায় তার দল জনগণকে সম্পৃক্ত করে সর্বাত্মক আন্দোলন চালিয়ে যাবে। বিএনপির ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার সকালে রাজধানীর শেরাবাংলা নগরস্থ চন্দ্রিমা উদ্যানে সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে পুস্পমাল্য অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের  প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, বিএনপির আন্দোলন চলমান এবং আগামীতেও বিএনপির আন্দোলন চলবে। আন্দোলনের মধ্যে দিয়েই সরকারকে নির্বাচন দিতে বাধ্য করা হবে। বিএনপির ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দলের কেন্দ্রীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে রাজধানীর শেরে বাংলানগরে অবস্থিত শহীদ জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া পাঠ করা হয়। বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠন সারা দেশে শান্তিপূর্ণভাবে দিবসটি পালন করলেও ঝালকাঠি জেলা সদরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর র‍্যালিতে পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে। এতে বিএনপির ২০ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন বলে দলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। এদিকে, আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ কটাক্ষ করে বলেছেন, “বিএনপিকে লাইফ সাপোর্ট দিয়ে রাখা হয়েছে। তাই তাদের এখন কোনো কার্যকলাপ নেই। শত চেষ্টা করেও দলটি লাইফ সাপোর্ট থেকে বের হতে পারছে না। দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক  আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাছান মাহমুদ এসব কথা বলেন। উল্লেখ্য১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের নতুন দর্শন উপস্থাপন করে ১৯ দফা কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিএনপি প্রতিষ্ঠার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন।  এ দলের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ৫টি সরকার। ২০০৯ সালের ৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয়েছে দলের পঞ্চম জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশন।  তবে, দীর্ঘ আট বছর ধরে ক্ষমতার বাইরে থেকে বৈরী সরকারের মোকাবেলায়  বিএনপি এখন  বিপর্যস্ত। সর্বস্তরের নেতা-কর্মীই এখন হামলা-মামলায় জর্জরিত। খোদ দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ দলের সিনিয়র ও তৃণমূলের নেতাদের সবাই একাধিক মামলায় অভিযুক্ত। আজকেও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধে নতুন করে একটি মানহানির মামলা দায়ের করা হয়েছে। এদিকে, সাংগঠনিকভাবেও দলটি তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত সুসংগঠিত নয়। আজকের মতো এমন বৈরী পরিস্থিতির মুখে কখনো পড়েনি দলটি। এ অবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন  উঠেছে, বিএনপি কী পারবে জনগণের আকাঙ্ক্ষা ধারণ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম করে জয়ী হতে? এ প্রসঙ্গে প্রবীণ সাংবাদিক জনাব এরশাদ মজুমদার  বলেন, রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গী থেকে বিচার করলে বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ একই রকম গণতন্ত্র ও পুঁজিবাদী অর্থনীতির সমর্থক। তবে সাধারণ মানুষ মনে করে বিএনপি একটু ইসলাম ঘেঁষা এবং আওয়ামী লীগ ধর্মনিরপেক্ষতার নামে ধর্মের বিপক্ষে কাজ করে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপিকেই জনগণ ভোট দিয়ে ক্ষমতায় পাঠাবে। জনগণ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামার জন্য প্রস্তুত। বামপন্থী রাজনীতিক বাসদের কেন্দ্রীয় নেতা  রাজেকুজ্জামান রতন মনে করেন, আওয়ামী লীগের লুটপাট, দুর্নীতি ও অগণতান্ত্রিক শাসনের বিপরীতে বিএনপি কি ধরনের শাসন কায়েম করবে তার নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত তারা জনগণের সমর্থন পেতে পারে না। রাজনৈতিক বিশ্লেষকগণ মনে করেন, ৫ জানুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনে গঠিত সরকারের বৈধতার  প্রশ্ন, নানাবিধ  অগণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ড, দুর্নীতি এবং   দুঃশাসনের কারণে জনগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ থাকলেও ব্যাপক জনগণ এখনি বিএনপির নেতৃত্বে সম্পূর্ণ আস্থার সাথে সরকার পরিবর্তনের আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে আগ্রহী হয়ে ওঠে নি।

যোগাযোগ

Editor:Sahadul Suhed, News Editor:Loukman Hossain E-mail: news.spainbangla@gmail.com