Latest News

সিলেটের ওসমানী নগরে ফ্রান্স প্রবাসী যুবককে পিটিয়ে হত্যা

এসবিএন ডেস্ক: সিলেটের ওসমানীনগরে ফ্রান্স প্রবাসী সিরাজুল ইসলাম (২৭) নামক এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ২৩ সেপ্টেম্বর এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত সিরাজুল ইসলাম সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ থানার ইলাশপুর গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে। জানা যায়, ঐদিন রাত সাড়ে ৮ টার সময় সিরাজুল তার তিন সঙ্গী মোগলাবাজার থানার  বারইগ্রামের তফুর আলীর ছেলে তাজুল ইসলাম (৩১), জালালাবাদ থানার আখালিয়া নয়াবাজার গ্রামের আব্দুল মতিনের ছেলে কবির আলম (৩০) ও গোলাপগঞ্জ থানার ঢাকা দক্ষিণ গ্রামের মৃত তৈমুছ আলীর ছেলে লিটন আহমদ (২৭) কে নিয়ে
একটি মাইক্রোবাস যোগে ওসমানীনগর থানার উছমানপুর ইউনিয়নের ইছামতি গ্রামের আহমদ আলী মেম্বারের বাড়ীতে যান। ওসমানীনগর থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আহমদ আলী মেম্বারের বাড়ির লোকজন মেম্বারের মেয়ে অপহরণ করার জন্য গাড়ি নিয়ে আসা হয়েছে এমন অভিযোগে চারজনকে মারপিট করেন। বেধরক মারপিটের কারণে সিরাজুল ইসলামের অবস্থা আশংকাজনক হলে তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। রাত বারটার সময় হাসপাতালে সিরাজুলের মৃত্যু হয়। ওসমানীনগর থানা পুলিশ নারী অপহরণে জড়িত থাকার অভিযোগে মাইক্রোবাসসহ (গাড়ী নং- ঢাকা মেট্রো চ-১৩-৫১৬৭)  নিহতের তিন সঙ্গীকে আটক করেছেন। তাদেরকে ২৪ সেপ্টেম্বর, বুধবার ৫৪ ধারায় আদালতে চালান করা হয়েছে।
ফ্রান্স প্রবাসী সিরাজুল ইসলামের এ মৃত্যু নিয়ে থানা প্রশাসন, স্থানীয় ওসমানীনগর, ফেঞ্চুগঞ্জসহ ফ্রান্স ও স্পেনে তার পরিচিতজনদের মাঝে রহস্য ঘুরপাক খাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পাওয়া নিহত সিরাজুল ইসলামের পরিচিতজনদের স্ট্যাটাস থেকে এমনও তথ্য পাওয়া গেছে যে নিহত সিরাজুল ইসলাম ওসমানীনগর থানার উছমানপুর ইউনিয়নের ইছামতি গ্রামের আহমদ আলী মেম্বারের কাছে পাওনা টাকা আদায় করার জন্য তার বাড়িতে গেলে আহমদ আলী মেম্বার ও তার বাড়ির লোকজনদের মারধরের কারণে সিরাজুল ইসলামের মৃত্যু ঘটে। সম্প্রতি দেশে গিয়ে পাওনা টাকা আদায়ের জন্য ফোনে সিলেটের এক সাংবাদিকের সহযোগিতাও তিনি চেয়েছিলেন। আবার  আহমদ আলী মেম্বারের মেয়ের সাথে প্রেমঘটিত সম্পর্কের কারণেও আহমদ আলী মেম্বার ও তার বাড়ির লোকজনের মারপিটে সিরাজুল ইসলামের মৃত্যু ঘটেছে- এমন তথ্যও  বাংলাদেশের জাতীয় একটি দৈনিক পত্রিকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রকাশ করেছে। ঐ সূত্র থেকে জানা যায়, সিরাজুল ইসলামের সাথে আহমদ আলী মেম্বারের মেয়ের দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। মেয়েকে বিয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে আহমদ আলী মেম্বার বিভিন্ন সময়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন। এক পর্যায়ে ঐ টাকা ফেরত পাবার জন্য নিহত সিরাজুল ইসলাম চাপ সৃষ্টি করেন। একসময় বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পাওয়ার বিনিময়ে তার  মেয়ে বিয়ে দিতে রাজি হলে মঙ্গলবার রাতে বিয়ে ঠিক করতে সিরাজুল তার সঙ্গীদের নিয়ে ইছামতি গ্রামে কনের বাড়ীতে আসেন। বিয়ের আলোচনায় কথা কাটা কাটি হলে তাদের অপহরণকারী সাজিয়ে মারধর করা হয়। এই বেধরক মারধরের কারণেই সিরাজুলের মৃত্যু ঘটে। ফ্রান্সে বসবাসরত একজন সাংবাদিক তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেছেন, নিহত সিরাজুল ইসলামের মোবাইল ফোনের নাম্বার থেকে যাওয়া আহমদ আলী মেম্বার ও তার মেয়ের ফোনালাপের রেকর্ড থেকে  পুলিশ মূল ঘটনার সূত্র পেতে পারে।  আর এ সূত্র থেকেই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন হবে।
ঘটনার পর থেকে আহমদ আলী মেম্বার ও ঘটনার সময় উপস্থিত কাউকে এলাকায় পাওয়া যাচ্ছেনা।
উল্লেখ্য, নিহত সিরাজুল ইসলাম এক সয়ম স্পেনের মাদ্রিদে বসবাস করতেন। মাদ্রিদ থেকে সাংবাদিক সেলিম আলম জানান, সিরাজুল ইসলাম ’লাল সালাম’ নামে একটি সাময়িকী প্রকাশ করতেন। বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে অগ্রভাগেও থাকতেন তিনি। মাদ্রিদের বাংলাদেশী কমিউনিটিতে সুপরিচিত সিরাজুল ইসলাম পরে ফ্রান্সের প্যারিসে পাড়ি জমান।

যোগাযোগ

Editor:Sahadul Suhed, News Editor:Loukman Hossain E-mail: news.spainbangla@gmail.com