বিয়ানীবাজারে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপে দফায় দফায় সংঘর্ষ ওসি, সাংবাদিক,পথচারীসহ আহত ১৫ ॥ গুলি,টিয়ারসেল নিক্ষেপ

সুফিয়ান আহমদ,বিয়ানীবাজার প্রতিনিধিঃ বিয়ানীবাজারে ছাত্রলীগের বিবদমান পল্লব গ্রুপ ও জামাল গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রাত ৮ থেকে শুরু করে রাত ১০টা পর্যন্ত দফায় দফায় এ সংঘর্ষ চলে। পৌরশহরের দক্ষিণে বাজারে চলা সংঘর্ষের সময় দিগ¦বিদিক ছুটোছুটি করতে থাকেন পথচারীরা। ব্যবসায়ীরা বন্ধ করে দেন দোকান পাঠ। এসময় উভয় গ্রুপের পাল্টাপাল্টি ইটপাটকেল নিক্ষেপে আহত হয়েছেন বিয়ানীবাজার থানার ওসি,এসআই,সাংবাদিক,পথচারীসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। আহতরা বিয়ানীবাজার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। উভয় গ্রুপ নিজ নিজ অবস্থান থেকে পুনরায় শক্তি প্রদর্শণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সিলেট থেকে এক প্লাটুন অতিরিক্ত দাঙ্গা পুলিশ রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিয়ানীবাজারে আসে। এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিয়ানীবাজার পৌরশহরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। জানা যায়, সোমবার দুপুরে বিয়ানীবাজার সরকারী (অনার্স) কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের বিবদমান সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আবুল কাশেম পল্লব গ্রুপের কর্মী হিফজুর উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক জামাল হোসেন এর গ্রুপের কর্মী রনি (২০) কে মারধর করে। তখন জামাল গ্রুপের কর্মীরা পাল্টা আক্রমণের চেষ্টা করলে পুলিশী তৎপরতার কারণে পারেনি। এরপর উভয় গ্রুপ কলেজ ক্যাম্পাস থেকে একে একে মিছিল সহকারে বের হয়ে যায়। এদিকে রাত ৮টার দিকে দক্ষিন বাজারের জনতা মার্কেটস্থ নিজ কার্যালয়ে অবস্থান নেয় জামাল গ্রুপ। এর ঠিক বিপরীতমুখী নিজ কার্যালয়ে অবস্থান নেয় পল্লব গ্রুপে কর্মীরা। তখন থেকেই উভয় গ্রুপের মধ্যে দেখা দেয় ব্যাপক উত্তেজনা। এর একপর্যায়ে জামাল গ্রুপের কর্মী মাসুদ পল্লব গ্রুপের এক কর্মীর উপর আকস্মিক হামলা করে থাকে আহত করে। আর তখনই শুরু হয় উভয় গ্রুপের মধ্যে  ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ। এসময় তাদের হামলায় পথচারীরা দিগ¦দিগ ছুটোছুটি করতে থাকেন। বন্ধ করে দেয়া হয় সব দোকানপাঠ। খবর পেয়ে বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয় গ্রুপকে নিভৃত করে। পুলিশের অনুরোধে জামাল হোসেন তার গ্রুপ নিয়ে কার্যালয় থেকে বের হয়ে মিছিল সহকারে পৌরশহরের উত্তর বাজারের দিকে যেতে চাইলে পিছন দিক থেকে তাদের উপর পুনরায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে পল্লব গ্রুপের কিছু কর্মী। এসময় জামাল গ্রুপও পাল্টা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। শুরু হয় দফায় দফায় সংঘর্ষ বিরতিহীনভাবে রাত ১০টা পর্যন্ত চলে এ সংঘর্ষ। এসময় সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। উভয় গ্রুপের সংঘর্ষের সময় বিয়ানীবাজার থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ,এসআই জহির, এসআই জহিরুল,সাংবাদিক এম সিন উদ্দিন,সুফিয়ান আহমদ, ৩জন পথচারীসহ উভয় গ্রুপের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। গুরুত্বর আহত বিয়ানীবাজার থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ ও এসআই জহির বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে সিলেট থেকে এক প্লাটুন দাঙ্গা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিয়ানীবাজার পৌরশহরসহ আশপাশ এলাকায় থমথমে ও ভীতিকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে।  এব্যাপারে বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যদি উভয় গ্রুপ আর সংঘর্ষে জড়ানোর চেষ্টা করে তাহলে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের জন্য আমরা আরো কঠোর হবো।