Latest News

আন্দোলনে প্রস্তুত খালেদা নেতাদের টেনশন নেই

এসবিএন ডেস্ক.  অবাধ নিরপেক্ষ ও সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নতুন একটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন আদায়ে সরকারকে বাধ্য করতে আন্দোলনের সকল প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া আর সেক্ষেত্রে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায়ও তিনি পিছপা হবেন না। আন্তাজাতিক সমর্থন আদায়েও আন্দোলন একটি বড় নিয়ামক শক্তি বলেও তিনি মনে করেন।  বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া সরকারের সাথে দেন দরবার করে কোনো ফলের আশা না করে একটি সফল ও গনমুখী আন্দোলন ছাড়া নতুন নির্বাচন আদায়ের দাবি পূরণ অসম্ভব বলেও তার ধারনা। আর তাই আন্দোলনে যেতে আর সময় ক্ষেপন করতে চাইছে না তিনি। আন্দোলনে ফিরতে ইতিমধ্যে নানা হিসাব-নিকাশ শুরু করেছেন ২০ দলীয় জোট নেত্রী। নতুন উদ্যমে একটি কার্যকর আন্দোলনের রোডম্যাপ নির্ধারণ করতেও জোর প্রক্রিয়া শুরু করেছেন তিনি,পাশাপাশি প্রবাসে বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠন ছাড়াও জাতীয়তাবাদী সকল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে দেশের বাইরেও আর্ন্তজাতিক পরিমন্ডলের আরো সমর্থনের উপড় জোর দিচ্ছেন তিনি। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বাংলা কাগজকে এসব কথা জানিয়েছেন। বহুদিন পুর্বে বাংলাদেশের একটি বাহিনীর প্রধান থাকা অন্যতম নীতি নির্ধারক ঐ নেতা জানান, আগামী ৫ জানুয়ারি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের এক বছর পূর্তির আগেই বড় ধরনের আন্দোলন গড়ে তোলার পক্ষে বিএনপি চেয়ারপার্সন। সম্প্রতি দলের নীতি নির্ধারক ও জোটের শীর্ষ নেতাসহ একাধিক বৈঠকে আন্দোলন সম্পর্কে নিজের এমন কঠোর মনোভাবের কথা তিনি তুলে ধরেছেন। একটি কার্যকর আন্দোলন গড়ে তুলতে করণীয় ও নতুন কর্মসূচি নির্ধারণে খালেদা জিয়া সম্প্রতি দলের নীতি নির্ধারক ফোরাম স্থায়ী কমিটি ও ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। চূড়ান্ত আন্দোলনে যাওয়ার আগে দলের সাংগঠনিক অবস্থা জানতে তিনি এর আগে দলের নির্বাহী কমিটির কর্মকর্তা অর্থাৎ ভাইস চেয়ারম্যান, যুগ্ম মহাসচিব ও সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। দেশের সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতিসহ নতুন নির্বাচন আদায়ে করণীয় জানতে খালেদা জিয়া দেশের বিশিষ্ট নাগরিকদের পাশাপাশি বিএনপিপন্থি পেশাজীবী নেতাদের মতামত নিয়েছেন। গুলশান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে বিএনপি পন্থী বুদ্ধিজীবী ছাড়াও দেশের জ্যেষ্ঠ নাগরিকরা অংশ নেন। জানা গেছে, এসব বৈঠকে চলমান আন্দোলন জোরদার করতে পেশাজীবী ও জ্যেষ্ঠ নাগরিকরা তাদের মতামত তুলে ধরেছেন। জনগণকে সম্পৃক্ত করে আন্দোলন জোরদারে করণীয় সম্পর্কেও তারা খালেদা জিয়াকে পরামর্শ দিয়েছেন। বিএনপির দায়িত্বশীল আরেক নেতা জানান, ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া ২০ দলীয় জোটের বাইরের রাজনৈতিক দলগুলোকে এক মঞ্চে নিয়ে আসার প্রক্রিয়া নতুন করে শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন খালেদা জিয়া। রাজনৈতিক সর্বোচ্চ ছাড় দিয়ে হলেও নতুন নির্বাচন আদায়ের দাবিতে একটি জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে চান তিনি। এজন্য পর্দার অন্তরালে বেশ জোরেশোরে সরকার ও ২০ দলীয় জোটের বাইরে থাকা অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এসব বৈঠকে ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে বলেও জানা গেছে। এদিকে একটি গ্রহণযোগ্য নতুন জাতীয় সংসদ নির্বাচন আদায়ের জন্য জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিশ্বকে নিজেদের অনুকূলে নিতে জোরদার উদ্যোগ অব্যাহত রেখেছে বিএনপি। সম্প্রতি যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা কয়েকটি দেশের বিএনপির প্রতিনিধিরা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে অংশ নিয়েছেন। এসব ফোরামে বিএনপি নেতারা ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত একতরফা নির্বাচনসহ দেশের বর্তমান বিরোধী দল দমনে সরকারের কঠোর অবস্থানের কথা তুলে ধরছেন।  নেতাদের টেনশন নেই ঃ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া আর যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকলেও তাঁর দল ও নেতা-কর্মীরা কতোটা প্রস্তুত তা নিয়েও হিসাব কষছেন রাজনীতিক বিশ্লেষকরা। ৫ জানুয়ারী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজধানীর বাইরে তুমূল আন্দোলন গড়ে উঠলেও রাজধানী ঢাকায় নেতা কর্মীদের দেখা যায়নি। এই সংকট কাটিয়ে উঠতে ঢাকা মহানগরী বিএনপিকে ঢেলে সাজাতে নতুন নেতৃত্ব দিলেও কোনো নতুনত্ব নেই। বিশেষ করে মহানগর কমিটির আহবায়ক মির্জা আব্বাস আর সদস্য সচিব হাবিবুন নবী খান সুহেলের অনুসারীদের অন্তঃদ্বন্ধে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছেনা। যে ছাত্রদল নিয়ে বিএনপির একসময় আন্দোলনের বড়াই ছিলো সেই ছাত্রদলে কমিটি গঠনের পর দ্বন্ধ আরো চাঙ্গা হয়ে মহামারি ধরার অবস্থ। দেশের বিভিন্ন জেলা কমিটিতে দ্বন্ধ আর মারামারি প্রায় নিয়মিতই। সম্প্রতি সিলেটের কমিটি নিয়ে ঝাড়মিছিলের আবিভার্বে অন্যান্য জেলা কিংবা মহানগর কমিটির কি দশা হবে তা বলা বাহুল্য। নেতা-কর্মীরা ভাবছে ম্যাডাম তো র্দুবার আন্দোলন আন্দোলন বলেই যাচ্ছেন,এবার ও একই কথা বলছেন। সেকারনে তেমন প্রস্তুত নয় দলের তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। আর তৃণমূল পর্যায়ে আন্দোলনের ছোঁয়া বেগবনা না করতে পারলে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার এবারের টার্গেটও পূরণ হবেনা বলেই অভিজ্ঞ মহল মনে করেন। আর কেন্দ্রীয় নেতারা সব সময়ই আন্দোলনের কথা বলে ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনে কোট টাই পড়ে বক্তব্য রাখেন অনেককে পাওয়াও যায়না। সেক্ষেত্রে খালেদা জিয়ার ৫ জানুয়ারীর টার্গেট সফল হওয়ার সম্ভাবনা কম দেখলেও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন এখন বিএনপির এসিড টেস্টের সময়। এবার বিফল হলে আন্তর্জাতিক সমর্থনও হারাবে তার। আর আর্ন্তজাতিক সমর্থন সবসময়ই জনসমর্থনের উপড়ই থাকে। তারা ভাববে বিএনপির জনসমর্থন নেই অতএব সরকারকে সমর্থন করে অনেক  কিছু পাওয়াই সম্ভব।

a

যোগাযোগ

Editor:Sahadul Suhed, News Editor:Loukman Hossain E-mail: news.spainbangla@gmail.com