Latest News

খণ্ডকথা ৭: পলিটিক্যাল এমিউজমেন্ট

আজিম খান চৌধুরী :  কিছু মানুষ আছে যাদের কৌতুক বলতে হয় না, তাদের দেখলেই মানুষের হাসি পায় ৷ আর কিছু মানুষ আছে তারা কৌতুক বলতে পারেনা, বলার আগেই হাসবে ৷ তারা বিশেষ কোন মানুষ না, এ ধরনের দুই একজন মানুষ সবার বন্ধু মহলেই আছে ৷ কিন্তু কৌতুক লিখতে গেলে এধরনের কোন সমস্যায় পড়তে হয়না, লিখে দিলেই শেষ ৷ তবে কৌতুকগুলো যদি কোন কিছুর সঙ্গে মিলে যায় দয়া করে সেটা কাকতাল হিসাবেই সবাই গণ্য করবেন ৷
পুরাতন একটা কৌতুক দিয়ে শুরু করি ৷ এহিয়া খানের একজন প্রাইভেট নাপিত ছিল ৷ ঘরে এসে সে এহিয়া খানের চুল কাটত ৷ চুল কাটতে আসলেই নাপিত এহিয়া খানকে জিগ্যেস করত, ’স্যার নির্বাচন কবে দিবেন?' কথাটা শুনলেই এহিয়া খান তেলে বেগুনে জ্বলে উঠতেন ৷ আশে পাশে থাকা চেলা চামুন্ডারা নাপিতকে ধমক দিত ৷ তাদের একজন কৌতুহলবসে নাপিতকে জিজ্ঞেস করলো,  'আচ্ছা তুমি একই প্রশ্ন করে প্রতিবারই ধমক খাও, তারপরো কেন যতবারই এখানে আসো, এই একই প্রশ্ন কর?’ নাপিত খুব ভদ্র ভাবে বলল ’স্যার উনাকে যখন নির্বাচনের কথা জিজ্ঞেস করি, তখন উনার মাথার চুল সব খাড়া হয়ে যায়, আর আমার কাজ করতে একটু সুবিধা হয়’।
জনপ্রিয়তা হারিয়ে ক্ষমতা চলে যাওয়ার ভয় থাকলে যে জিনিসটা সবচাইতে ভয়ের, সেটা হলো নির্বাচন ৷ নির্বাচনের ভয় শুধু উনার না, আরো অনেকেরই ৷ এহিয়া খান এক সময় কিছু অফিসার কে ডেকে এনে বললেন 'কুচ বানালো কুচ বানালো'৷ তার মানে দুই নম্বরি করে কিছু পয়সা কামাতে উপদেশ দিতেন ৷ এই অফিসার গুলোর দুই নম্বরির প্রমানাধি সংগ্রহ করতেন এহিয়া ৷ অফিসাররা যখন বুঝতে পারলেন তিনি বেশি দিন টিকবেন না; তখন পালাতে চাইলে তিনি প্রমান সহ ধমক দিতেন, ভয় দেখাতেন ৷ সুতরাং ক্ষমতা গেলে শুধু এহিয়ার একার ক্ষতি না; ক্ষতি অনেকেরই ৷ তার পরেও সবার উপর পাবলিক সত্য তাহার উপরে নাই ৷ একদিন এহিয়াকে ক্ষমতা ছাড়তেই হলো ৷
এহিয়া খানের গাল মোটেই মসৃন ছিল না ৷ নাপিত এহিয়ার দাঁড়ি সেভ করার সময় প্রতিবারই একটু না একটু গাল কাটবে ৷ একদিন নাপিত আসতে পারেনি। নাপিতের ছেলে আসল ৷ বাবার কাছ থেকে সে জানত এহিয়ার গালের অবস্থা ৷ গাল যেন না কাটে তার জন্য সে তার থলে থেকে একটি ছোট কাঠের বল বের করে এহিয়ার মুখে রাখতে দিল, যেন গাল কিছুটা ফুলে থাকে ৷ খুব সুন্দর মসৃন সেভ হল এবার ৷ এহিয়ার বল থেরাপি পছন্দ হল এবং বলটি তিনি রেখে দিতে চাইলেন ৷ বলটি মুখে রেখেই বলটি কি তিনি রেখে দিতে পারেন কিনা জানতে চাইলেন ৷ ছেলেটি না বললে তিনি বললেন 'ধর আমি যদি বলটি গিলে ফেলি তাহলে?’ ছেলেটি বলল,  'সবাই যেভাবে পরদিন এসে আমাকে দিয়ে যায় আপনাকেও দিতে হবে' ৷ কথাটা উপলব্ধি করার সঙ্গে সঙ্গে বলটি মুখ থেকে ফেলে দিলেন ৷ ছেলেটি মনে মনে ভাবলো, বাবা হলে নিশ্চই বলটা ফেরত আনতে পারতেন না ৷ এহিয়ার বুঝা উচিত এটা বাবা না। এটা তার পরের প্রজন্ম ৷
দেশে থাকতে মাঝে মধ্যে দুই একটা ইংরেজি পত্রিকা দেখতাম ৷ একবার ডেইলি স্টারে একটা কৌতুক পড়েছিলাম ৷ কিন্তু প্রথমে কৌতুকটির আগাগুরি বুঝিনি, কারও মাথায় বুদ্ধি গিজগিজ না করলে সঙ্গে সঙ্গে বুঝার কথাও না ৷ পরে অনেকক্ষণ চিন্তা করার পর বিষয়টা মাথায় ঢুকে ৷ কৌতুকটা এমন ছিল 'একটা ছোট ছেলেকে গির্জার ফাদার ধমক দিয়ে বললেন do you know where is God? ছেলেটি ডানে বামে তাকালো তারপর দরজা খোলা পেয়ে সোজা এক দৌড়ে ঘরে চলে আসল ৷' কৌতুকটি এখানেই শেষ, এবার বলেন কে কি বুঝলেন ?
কৌতুকটি বুঝতে হলে কিছু কথা বাড়িয়ে লিখতে হবে ৷ যেমন- একটি ছোট শহরে কম বয়সী দুই ভাই ছিল, ভীষন পাজি ৷ বড়টার চাইতে ছোটটা বেশি পাজি ৷ শহরের কারো কিছু হারালেই সরকারের বিরোধী দলের মত তাদের উপর দোষ চাপাতো ৷ অন্যরা করেও তাদের উপর দোষ দিত ৷ শহের নিয়ম অনুযায়ী গির্জার ফাদার ছোটদের বিচার করেন ৷ একবার ছোট ভাইটির বিচার করতে গিয়ে ফাদার ভাবলেন ছেলেটির মনে যদি ইশ্বরের ধারণা দিয়ে দিতে পারি, তাহলে তারা হয়ত ভালো হয়ে যাবে ৷ এজন্য তিনি ছেলেটিকে বললেন 'do you know where is God? ছেলেটি ডানে বামে তাকালো তারপর দরজা খোলা পেয়ে সোজা এক দৌড়ে ঘরে চলে আসল ৷ ঘরে এসে ভাইকে বলল জলদি খাটের নিচে ঢোক কথা আছে ৷ (বিরোধী দলের মত তাদের গুরুত্ব পূর্ণ মিটিং টিটিং সব ওই খাটের তলায়ই হয় ৷) তারপর হাঁপাতে হাঁপাতে বলল 'শুন গির্জার ফাদার ব্যাটার গড হারাইসে। এখন আমারে সন্দেহ করে ৷ আমারে বলে 'গড কই আমি জানি কিনা?'
যা কিছুই হারায় গিন্নি বলে ওই কেষ্টা ব্যাটাই চোর ৷ বিরোধী দলের উপর আজকাল পুলিশি নির্যাতন যেন খুবই স্বাভাবিক ৷ কিন্তু বিরোধী দলের মানুষ স্থানীয় আর পুলিশ সব সময় বাহিরের জেলার ৷ স্থানীয়রা সবসময় শক্তিশালী ৷
এক এলাকায় চোরের উপদ্রব খুব বেশি ৷ এক লোক গোসল করতে পুকুরে নামার পূর্বে কাপড়চোপরের উপর একটা চিরকোট লিখে রাখল ৷ তাতে লিখা ছিল 'আমি বক্সিংয়ে অলেম্পিক চ্যম্পিয়ন' ৷ লোকটা গোসল সেরে উঠে এসে দেখে কাপড়চোপর নাই ৷ কাপড় গুলোর জায়গায় একটা কাগজে লেখা 'আমি দৌড়ে স্থানীয় চ্যম্পিয়ন' ৷
কিন্তু ধাপ্পা বাজিতে স্থানীয় আর অস্থানীয় লাগেনা, শুধু দুই নম্বরি বুদ্ধি আর চাপাবাজ হওয়া চাই ৷ সঙ্গে মিডিয়া থাকলেতো কোন কথাই নেই ৷
এহিয়া খান সাহেব ঠিক করলেন, ছেলের বিয়ে দেবেন।
ছেলেকে গিয়ে বললেন, শোন আমি ঠিক করেছি তোর বিয়ে দেব। পাত্রীও ঠিক।
ছেলে: কিন্তু বাবা আমি তো নিজের পছন্দে মুসলমান বাঙালি মেয়ে বিয়ে করতে চাই!
এহিয়া খান: পাত্রী বিল গেটসের  মেয়ে।
ছেলে: তাহলে বাবা আমি রাজি! খ্রিস্টান ইহুদি নো প্রবলেম, মানি ইজ অল ৷
এরপর এহিয়া খান গেলেন বিল গেটসের কাছে। বললেন, আপনার মেয়ের সঙ্গে আমার ছেলের বিয়ে দিতে চাই।
বিল গেটস: কিন্তু আপনার ছেলে করে কী?
এহিয়া খান: সে বিশ্ব ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট।
বিল গেটস: ও! তাহলে আমি রাজি।
সব শেষে এহিয়া খান গেলেন বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্টের কাছে। বললেন, আমার ছেলেকে আপনার ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ দিতে পারেন।
প্রেসিডেন্ট: কিন্তু আপনার ছেলের কি সেই যোগ্যতা আছে? তা ছাড়া  আমার একজন ভাইস প্রেসিডেন্ট আছে। আমি তো তাকে সরিয়ে  আপনার ছেলেকে নিতে পারি না।
এহিয়া খান: কিন্তু সে যদি বিল গেটসের মেয়ের জামাই হয়?
প্রেসিডেন্ট: তাহলে আমি রাজি !

১২ জানুয়ারি, ২০১
লন্ডন।

যোগাযোগ

Editor:Sahadul Suhed, News Editor:Loukman Hossain E-mail: news.spainbangla@gmail.com