মহিবুল হাসান খান কয়েশ: লিখার শুরুতেই হাত জোর করে ক্ষমা চেয়ে তারপর লিখা শুরু করব কিনা তাই নিয়ে ভেবে অনেকখানি সময় পার করেও কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি। সিদ্ধান্তহীনতায় লিখা শুরু করার ঠিক আগ মুহূর্তে নিজের মনেই প্রশ্ন জাগলো, কেন আমি ক্ষমা প্রার্থনা করতে যাব ? কার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করব ?
সামান্য কিছুদিন হলো প্রিয় দেশ মাতৃকায় তিন তিনটি সিটি কর্পোরেশন এর নির্বাচন হলো। পত্র পত্রিকায় যা দেখলাম আর বিভিন্ন মাধ্যমে নির্বাচনের যে ভয়াবহ চিত্র দেখলাম তাতে সন্দেহ জাগে যে, আসলেই কি সেটা নির্বাচন ছিল? নাকি আগে থেকেই ফলাফল নির্ধারণ করা ছিল ? আমি সব সময় ই একটু অতি মাত্রায় ভিতু প্রকৃতির। মুখ ফুটে কিছু বলে ফেলার আগেই ভয়ে জর থর হয়ে যাওয়াটা আমার অন্যতম বৈশিষ্ট্যের অংশ বিশেষ। আমি এই লিখাটাও যে সাহসী বীরের মত লিখছি তা পাঠক ভাবতে পারেন, কিন্ত কানা মনে জানা এই সত্যটা আমি উপলব্ধি করতে করছি প্রায় রীতিমত। নির্বাচন নিয়ে বুক ভরা আশা ছিল। অবশ্য সিটি কর্পোরেশন এর আগের কোনো নির্বাচনের প্রসঙ্গ আমি আনতে চাচ্ছিনা। ভেবেছিলাম এইবার হয়ত জনগণ তাদের মূল্যবান ভোট তাদের ইচ্ছা মাফিক প্রদান করে নাগরিক অধিকারের কিছুটা পূরণে সক্ষম হবে। কিন্তু আমার মত লক্ষ লক্ষ প্রবাসী বাঙালি অবাক নয়নে যা দেখতে বাধ্য হলো তাতে সদ্য গদিনশীল সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠাটা অমূলক নয়।
কিন্তু আমি কক্ষনো বিশ্বাস করিনা বা করতে চাইনা যে , এই নির্বাচনে নির্বাচন কর্মকর্তাদের সরকারী নয় বরং সরকার দলীয় সিদ্ধান্ত চাপিয়ে তা শতভাগ পালন করতে বাধ্য করা হয়েছিল। শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে একচোখা দৃষ্টি স্থাপনে উত্সাহিত করা হয়েছিল। সাধারণ ভোটারদের বাইরে রেখে কেন্দ্রের দরজা বন্ধ করে এক হাতেই পুরো ব্যলেট বইতে সিল মেরে পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করার জঘন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। এক দিকে সরকারী দল বলছে নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু হয়েছে। আবার অন্যদিকে বিরোধী দল বলছে এমন জঘন্য কলংকিত নির্বাচন এর আগে কক্ষনো বাংলার মাটিতে অনুষ্ঠিত হয়নি। আর আমার মত হাজার জনতার ঘরের কোনে লুকিয়ে থেকে অন্তরের গভীরের উক্তিটি এই যে , আমরা সরকারী দল বা বিরোধী দল কোনো দলের কথায় বিশ্বাস করিনা বা করছিনা। নির্বাচন কেন্দ্রিক কিন্তু শত সহস্র ভিডিও ফুটেজ জাতির সামনে চলে এসেছে। আর সেই ফুটেজে যে নগ্ন নির্বাচল পরিলক্ষিক হয়েছে তা শতভাগ মিথ্যা ও জালিয়াত- সরকার তা প্রমান করুক। সুমিষ্ট ফলবিজ রোপনে যেমন সুমিষ্ট ফল আশা করা যায়; ঠিক তেমনি কাটা গাছের বীজ বপনে ফলাফল কাটাই। এই চরম সত্যটি যুগ যুগ ধরে সত্যের ধারাবাহিকতা বহন করে আসছে। তাহলে কি মনে করব যে, যে দিন গিয়েছে তা ভালই ছিল আর যে দিন আসছে তা অনুচ্চারিত কন্ঠে রক্তপাতের ডাক দিচ্ছে ?
রক্তের এই ঝরাঝরী আর কতকাল স্বাধীন বাংলায় চলবে তা কেউ সঠিক ভাবে বলতে পারেন ? তাহলে কবে বন্ধ হবে তার উত্তরটাও সহজে পেয়ে শান্তি পেতাম। শুনেছি গ্রামে গঞ্জের মায়েরাও তাদের সন্তানদের হাতের নাগালের বাইরে যেতে দেননা। পেট্রল বোমার ভয় সেই মায়েদের অন্তরে এমন ভাবে গেঁথে বসেছে যে, নিজ সন্তানকে সেই বোমার আঘাত থেকে রক্ষার চিন্তায় মগ্ন থাকেন। আর তাই স্বাভাবিক। মাস চারেক আগে এক প্রবাসী পিতা সারাদিনের কর্ম শেষে ঘরে ফিরে টেলিভিশনের পর্দায় নিজের ছেলেকে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পরে থাকতে দেখলেন। প্রথমে তিনি বিশ্বাস করতে না পারলেও সেটাই ছিল চরম সত্যি। দেশে ফিরে এলেন পিতা কিন্তু ফিরিয়ে দিতে পারলেননা পেট্রল বোমার আঘাতে স্কুলগামী সেই সন্তানের দুটি চোখ। ধিক সেই পবিত্র রাজনীতিকে অপবিত্র করার হীনমন্য রাজনীতিবিদদের। ধিক সেই ক্ষমতাবানদের, যারা সাধারণ জনগনের রক্তে রঞ্জিত হয়ে ক্ষমতার হাসি হাসেন। ধিক সেই বিরোধীদের, যারা খেঁটে খাওয়া জনতার লাশকে পুজি করে ক্ষমতায় আসতে চায়। দোষাদোষী, একঘেয়ে দলাদলি না করে সরকার ও বিরোধী দলের সকলের প্রতি আবেদন যে, সদ্য অনুষ্ঠিত নির্বাচন পর্যালোচনা করে এর সকল অনৈতিক দিকগুলোর হুকুম দাতা আর সদ্য থামা নৃসংশ পেট্রল বোমার অমানবিক কুকর্মের মূল হোতাদের আইনের আওতায় এনে চরম শাস্থি দেয়া হোক।
জাতি ক্ষমতা চায়না, জাতি শান্তি চায়। জাতি পেট্রল বোমা চায়না, জাতি আদরের সন্তানকে বুকে জড়িয়ে ঘুমাতে চায়।
বার্সেলোনা, স্পেন।
সামান্য কিছুদিন হলো প্রিয় দেশ মাতৃকায় তিন তিনটি সিটি কর্পোরেশন এর নির্বাচন হলো। পত্র পত্রিকায় যা দেখলাম আর বিভিন্ন মাধ্যমে নির্বাচনের যে ভয়াবহ চিত্র দেখলাম তাতে সন্দেহ জাগে যে, আসলেই কি সেটা নির্বাচন ছিল? নাকি আগে থেকেই ফলাফল নির্ধারণ করা ছিল ? আমি সব সময় ই একটু অতি মাত্রায় ভিতু প্রকৃতির। মুখ ফুটে কিছু বলে ফেলার আগেই ভয়ে জর থর হয়ে যাওয়াটা আমার অন্যতম বৈশিষ্ট্যের অংশ বিশেষ। আমি এই লিখাটাও যে সাহসী বীরের মত লিখছি তা পাঠক ভাবতে পারেন, কিন্ত কানা মনে জানা এই সত্যটা আমি উপলব্ধি করতে করছি প্রায় রীতিমত। নির্বাচন নিয়ে বুক ভরা আশা ছিল। অবশ্য সিটি কর্পোরেশন এর আগের কোনো নির্বাচনের প্রসঙ্গ আমি আনতে চাচ্ছিনা। ভেবেছিলাম এইবার হয়ত জনগণ তাদের মূল্যবান ভোট তাদের ইচ্ছা মাফিক প্রদান করে নাগরিক অধিকারের কিছুটা পূরণে সক্ষম হবে। কিন্তু আমার মত লক্ষ লক্ষ প্রবাসী বাঙালি অবাক নয়নে যা দেখতে বাধ্য হলো তাতে সদ্য গদিনশীল সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠাটা অমূলক নয়।
কিন্তু আমি কক্ষনো বিশ্বাস করিনা বা করতে চাইনা যে , এই নির্বাচনে নির্বাচন কর্মকর্তাদের সরকারী নয় বরং সরকার দলীয় সিদ্ধান্ত চাপিয়ে তা শতভাগ পালন করতে বাধ্য করা হয়েছিল। শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে একচোখা দৃষ্টি স্থাপনে উত্সাহিত করা হয়েছিল। সাধারণ ভোটারদের বাইরে রেখে কেন্দ্রের দরজা বন্ধ করে এক হাতেই পুরো ব্যলেট বইতে সিল মেরে পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করার জঘন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। এক দিকে সরকারী দল বলছে নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু হয়েছে। আবার অন্যদিকে বিরোধী দল বলছে এমন জঘন্য কলংকিত নির্বাচন এর আগে কক্ষনো বাংলার মাটিতে অনুষ্ঠিত হয়নি। আর আমার মত হাজার জনতার ঘরের কোনে লুকিয়ে থেকে অন্তরের গভীরের উক্তিটি এই যে , আমরা সরকারী দল বা বিরোধী দল কোনো দলের কথায় বিশ্বাস করিনা বা করছিনা। নির্বাচন কেন্দ্রিক কিন্তু শত সহস্র ভিডিও ফুটেজ জাতির সামনে চলে এসেছে। আর সেই ফুটেজে যে নগ্ন নির্বাচল পরিলক্ষিক হয়েছে তা শতভাগ মিথ্যা ও জালিয়াত- সরকার তা প্রমান করুক। সুমিষ্ট ফলবিজ রোপনে যেমন সুমিষ্ট ফল আশা করা যায়; ঠিক তেমনি কাটা গাছের বীজ বপনে ফলাফল কাটাই। এই চরম সত্যটি যুগ যুগ ধরে সত্যের ধারাবাহিকতা বহন করে আসছে। তাহলে কি মনে করব যে, যে দিন গিয়েছে তা ভালই ছিল আর যে দিন আসছে তা অনুচ্চারিত কন্ঠে রক্তপাতের ডাক দিচ্ছে ?
রক্তের এই ঝরাঝরী আর কতকাল স্বাধীন বাংলায় চলবে তা কেউ সঠিক ভাবে বলতে পারেন ? তাহলে কবে বন্ধ হবে তার উত্তরটাও সহজে পেয়ে শান্তি পেতাম। শুনেছি গ্রামে গঞ্জের মায়েরাও তাদের সন্তানদের হাতের নাগালের বাইরে যেতে দেননা। পেট্রল বোমার ভয় সেই মায়েদের অন্তরে এমন ভাবে গেঁথে বসেছে যে, নিজ সন্তানকে সেই বোমার আঘাত থেকে রক্ষার চিন্তায় মগ্ন থাকেন। আর তাই স্বাভাবিক। মাস চারেক আগে এক প্রবাসী পিতা সারাদিনের কর্ম শেষে ঘরে ফিরে টেলিভিশনের পর্দায় নিজের ছেলেকে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পরে থাকতে দেখলেন। প্রথমে তিনি বিশ্বাস করতে না পারলেও সেটাই ছিল চরম সত্যি। দেশে ফিরে এলেন পিতা কিন্তু ফিরিয়ে দিতে পারলেননা পেট্রল বোমার আঘাতে স্কুলগামী সেই সন্তানের দুটি চোখ। ধিক সেই পবিত্র রাজনীতিকে অপবিত্র করার হীনমন্য রাজনীতিবিদদের। ধিক সেই ক্ষমতাবানদের, যারা সাধারণ জনগনের রক্তে রঞ্জিত হয়ে ক্ষমতার হাসি হাসেন। ধিক সেই বিরোধীদের, যারা খেঁটে খাওয়া জনতার লাশকে পুজি করে ক্ষমতায় আসতে চায়। দোষাদোষী, একঘেয়ে দলাদলি না করে সরকার ও বিরোধী দলের সকলের প্রতি আবেদন যে, সদ্য অনুষ্ঠিত নির্বাচন পর্যালোচনা করে এর সকল অনৈতিক দিকগুলোর হুকুম দাতা আর সদ্য থামা নৃসংশ পেট্রল বোমার অমানবিক কুকর্মের মূল হোতাদের আইনের আওতায় এনে চরম শাস্থি দেয়া হোক।
জাতি ক্ষমতা চায়না, জাতি শান্তি চায়। জাতি পেট্রল বোমা চায়না, জাতি আদরের সন্তানকে বুকে জড়িয়ে ঘুমাতে চায়।
বার্সেলোনা, স্পেন।