Latest News

রমযানে পান করুন প্রচুর পানি

ডাঃ ফারহানা মোবিন:
পানি দেহের জন্য ভীষণ জরুরী। শুধু রমযান নয়, পুরো বছরে পান করুন প্রচুর পানি। পানি দেহের প্রতিটি অঙ্গের জন্য আনে সুফল।আমাদের দেহের ভেতরে কোন দাঁত নাই। তাই খাবার ভালো ভাবে হজম হবার জন্য প্রতিদিন গড়ে ১ - ২ লিটার পানি পান করাটা যথেষ্ট দরকার। পানি খাবারের সাথে মিশে খাবার হজমে সাহায্য করে। পানি আমাদের দেহের প্রতিটি অঙ্গের জন্য ভীষণ জরুরী।আমাদের দেহের অতি প্রয়োজনীয় একটি অঙ্গের নাম হলো কিডনী।  কিডনী দেহের ছাকন যন্ত্রের মতো কাজ করে। দেহের জরুরী উপাদানগুলোকে রেখে, অপ্রয়োজনীয় অংশগুলোকে মূত্রের সাহায্যে শরীরের বাহিরে বের করে দেয় কিডনী। এই অংগ আমাদের দেহে রয়েছে পেটের দুই পাশে দুইটি। প্রচুর পানি খেলে কিডনী কাজ করে ভালোভাবে। তবে কিডনী নষ্ট হয়ে যাবার পরে, চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত পানি খাওয়াটা অনুচিৎ।
পানি অ্যাসিডিটির প্রধান ওষুধ। প্রচুর পানি খেলে অ্যাসিডিটি বা গ্যাসট্রিকের পরিমাণ কমে যায়। বুকে জ্বালা পোড়া, বমি বমি লাগা, টক ঢেকুর ওঠা, পেটে ব্যাথা, বুকে আলপিনের মতো খোঁচানো ব্যাথা, পিঠে ব্যাথাও কমে যায়। খাবার সঠিক ভাবে হজম না হবার জন্য এমন হয়।
পানি দেহের চর্বি কমায়।  রমযানে তেলে ভাজা খাবার খাওয়া হয় বেশী। তাই ইফতারের পর থেকে সেহরী পর্যন্ত পান করুন প্রচুর পানি। পানি দেহের ফ্যাট সেলগুলোকে কমিয়ে দেয়। ফলে ওজন কমাতে সুবিধা হয়।যারা প্রচুর খাবার নিয়ন্ত্রণ ও ব্যায়াম করেন, ওজন কমাতে চান, তাদের নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার ও প্রচুর পানি পান করা উচিৎ। জন্ডিসের জন্য পানি অপরিহার্য্য। প্রচুর পরিমাণে পানি দেহের বিলিরুবিনের মাত্রা কমিয়ে দেয়। বিলুরুবিন হলো রক্তের একটি জরুরী উপাদান। যা নির্দিষ্ট পরিমাণের চেয়ে বেড়ে গেলে জন্ডিস হয়ে যায়। আবার গলব্লাডার বা পিত্তথলির কাজকর্ম সুষ্ঠুভাবে চালানোর জন্য পানি পান করাটা যথেষ্ট দরকার।
 ব্রণ দূর করতে পানি পান করুন। কাঠিন্যের সমস্যা দূর করার জন্য পানি ভীষণ দরকার। পানি নিয়মিত পান করলে খাবার ঠিক মতো হজম হয়, ব্রণও ভালো হয়। পুরো দেহে রক্ত চলাচল ঠিক মতো হবার জন্য ত্বকের উজ্জ্বলতা বজায় থাকে।
গর্ভবতীদের জন্য পানি  গর্ভস্থ শিশু পেটে পানির থলের মধ্যে থাকে। নিয়মিত পান করলে সেই পানির ব্যাগটি ভালো থাকবে।
যে কোন অপারেশনের পরে  পানি পান করলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবার জন্য কাটা জায়গায় চাপ লাগবেনা, রক্ত ঠিক মতো চলাচলের জন্য কাটা জায়গা দ্রুত শুকাবে।
অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা বজায় রাখে পানি  ঘাম ও মূত্রের সাহায্যে দেহের দূষিত তরল পদার্থকে বাইরে বের করতে সাহায্য করে। এতে অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা বজায় থাকে, হাত পায়ের তলায় জ্বালা পোড়া কমবে। যাদের বার বার পেসাবে ইনফেকশান হয়, তারা প্রচুর পানি পান করুন।
 মাতৃদুগ্ধদান কালীন সময়ে, অতিরিক্ত গরমে দেহের লবণ পানির সাম্যাবস্থা বজায় রাখার জন্য, ডায়াবেটিক ও উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের হৃৎপিন্ড ভালোভাবে কাজ করার জন্য  প্রচুর পরিমাণে পানি পান করাটা ভীষণ দরকারী।
 জন্মনিয়ন্ত্রণকারী পিল খান, এমন নারীরা প্রচুর পানি পান করুন।
কৌটার দুধ খায়, এমন শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্য হয় খুব বেশী। এই অবস্থা দূর করার জন্য দরকার প্রচুর পানি।
 দীর্ঘক্ষণ চোখ বা মস্তিষ্কের কাজ করার পরে পানি খেলে, মস্তিষ্কের প্রতিটি স্থানে রক্তের সাথে পানি পৌঁছে, কর্মক্ষমতা বাড়ায়।
 রক্তে ইনফেকশান বা  ইএসআর এর পরিমাণ কমায় পানি।
পানির অপর নাম জীবন। তাই সময় ও সুযোগ বুঝে নিয়মিত প্রচুর পানি পান করুন। কর্মক্ষেত্রে সম্ভব না হলে, যে সময়টুকু বাসায় আছেন, সেই সময়ে পানি পান করুন বেশী করে। আর রমযানে বেশী পানি খেলে অ্যাসিডিটির পরিমাণ কমবে। দূর হবে পানি শূন্যতা।





লেখিকা:   ডাঃ ফারহানা মোবিন
মেডিকেল অফিসার, গাইনী এ্যান্ড অবস,
      স্কয়ার হসপিটাল, ঢাকা।

যোগাযোগ

Editor:Sahadul Suhed, News Editor:Loukman Hossain E-mail: news.spainbangla@gmail.com