মুনজের আহমদ চৌধুরী : বাংলাদেশে সংসদ, সংবিধানের উজ্জল অধ্যায়ে কুশলী অার কৌশলী রাজনীতির প্রাঞ্জল অক্ষরে লেখা থাকবে অাপনার নাম...। কয়েক বছর অাগে তাঁর পদত্যাগের পরদিন এ মন্তব্য প্রতিবেদনটি পড়ে তিনি অামার নাম্বারটি নিয়ে ফোন করে দীর্ঘক্ষন কথা বলেছিলেন...। এত প্রবীণ এ নেতার অাদর মাখা কথায় সেদিন অাপ্লুত হই। অাজ সবই স্মৃতি। অামরা জীবিত মানুষকে সন্মান দিতে জানি না,সেটি পুরনো কথা। কিন্তু, যিনি চলে গেছেন অনন্তের যাত্রায়, তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়নি এখনো। এটুকু সময় অন্তত অামরা কি সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের বিদেহী স্মৃতির প্রতি সমালোচনার তীর ছোড়া বন্ধ রাখতে পারি না ? অাজ থেকে তিনি অার বর্তমান নন, শেষ ট্রেনের যাত্রী; ইতিহাস। তাঁর কর্মের কিছুটা বিচারের ভার থাকুক ইতিহাসের কাছেই। সব বিচার ফেসবুকের স্যোশাল ট্রায়ালে নাই বা হলো। তিনি যেন অন্তত শেষ যাত্রায় তাঁর দলের কাছ থেকে,দেশের মানুষের কাছ থেকে প্রাপ্য সন্মানটুকু পান। নয়বারের সাংসদ হিসেবে, একজন গনতন্ত্রকামী রাজনীতিক হিসেবে এটুকু সন্মান তিনি কি পেতে পারেন না ? যেখানে দেশে এখন রাজনীতি অার দুর্নীতি প্রায় সমার্থক, সেখানে সুরঞ্জিতের সমালোচনার অতিরঞ্জন বুঝিবা ভিন্ন ধর্মের অবলম্বী বলেই। কিন্তু, অন্য ধর্মের কোন ব্যাক্তির মৃত্যুতে অানন্দের প্রকাশ তো ইসলামের সুস্পষ্ট পরিপন্থী। মৃত মানুষের দাহ বা সৎকারের অপেক্ষা না করে তারঁ প্রতি ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ চোখে অাঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়ে যায় অামাদের নীচতা।
ধীমান-দীর্ঘদেহী,অার তার চেয়েও শতদীর্ঘ ক্যারিয়ার পলিটিশিয়ান এ নেতার স্মৃতির প্রতি অামাদের সকল নীচতা অার ক্ষুদ্রতার বলয়বৃত্তের ভেতর থেকেই জানাই পরম শ্রদ্ধাঞ্জলি।
৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭
মুনজের আহমদ চৌধুরী : সাংবাদিক, লন্ডন।