Latest News

বিএনপি’র কর্মীরা এখন রিকশা চালক, হকার, বাসার নাইটগার্ড

এসবিএন ডেস্ক: জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমাদের সাংবাদিক ভাইয়েরা অনেকে মারা গেছেন, নিহত হয়েছেন, অনেকে কারাগারে গেছেন আর আমাদের রাজনৈতিক কর্মীরা সারাদেশে প্রায় ১৮ লাখ আসামি। ১৯৭৫ সালের ১৬ জুনের পরে যেমন সাংবাদিক ভাইয়েরা অনেকে ফল বিক্রি করেছেন, বায়তুল মোকাররমের সামনে কাগজ বিক্রি করেছেন, আজ আমাদের রাজনৈতিক কর্মীরা রিকশা চালান এই ঢাকায়, তারা হকার হয়েছেন, তারা কোনো বাড়ির নাইটগার্ডের কাজ করছেন।’
গত ২১ জুন, বৃহস্পতিবার সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে এ আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন শওকত মাহমুদ, মাহমুদুর রহমান, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, কাদের গনি চৌধুরী প্রমুখ।
আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘আমাদের কোনো নেতাকর্মীরা তো নিজ নিজ এলাকাতেও থাকতে পারছেন না। যে যার মত করে সকলে চলে এসেছেন। এই ঢাকাতেই এক এলাকার লোক হয়ে এলাকায় থাকতে পারছেন না। বাধ্য হয়ে তাকে অন্যত্র চলে যেতে হচ্ছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘প্রতিদিনই আমরা কথা বলছি, কথা শুনছি, অনেক কথা বলছি। এখন এই কথাবার্তা খুব বেশি আমার নিজেরই শুনতে ইচ্ছে করে না, বলতেও ইচ্ছে করে না। এজন্য যে আমরা ধীরে ধীরে একটা অন্ধকার গহ্বরের দিকে প্রবেশ করেছি, যে গহ্বরের শেষ দিকে আলোর রেখা দেখা যাচ্ছে না। আমার মনে পড়ে এই প্রেস ক্লাবেই ২০১০ সালে মাহমুদুর রহমান সাহেব (আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক) গ্রেফতার হওয়ার পরে পাশেই একটি আলোচনা সভায় আমি জোরের সঙ্গে বলেছিলাম যে, আমরা একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রবর্তনের লক্ষণগুলো দেখতে পাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের সাংবাদিক ভাইয়েরা অনেকে মারা গেছেন, নিহত হয়েছেন, অনেকে কারাগারে গেছেন আর আমাদের রাজনৈতিক কর্মীরা সারাদেশে প্রায় ১৮ লাখ আসামি। ১৯৭৫ সালের ১৬ জুনের পরে সাংবাদিক ভাইয়েরা অনেকে ফল বিক্রি করেছেন, বায়তুল মোকাররমের সামনে কাগজ বিক্রি করেছেন। আজ আমাদের রাজনৈতিক কর্মীরা রিকশা চালান এই ঢাকায়, তারা হকার হয়েছেন, তারা কোনো বাড়ির নাইটগার্ডের কাজ করছেন।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দলের অনেকে এসে বলে, স্যার কী হবে? আমি বলি, হতাশাই শেষ কথা হতে পারে না, লড়াই করো, লড়াই করতে করতে আমরা একটা জায়গায় গিয়ে পৌঁছাবোই। আমরা তো এই বংলাদেশেই দেখেছি, নয় বছর, দশ বছর, বাংলাদেশেই তো একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশাল দেখেছি, কিন্তু এই বাংলাদেশের মানুষ কিন্তু জেগে উঠেছে। এই বাংলাদেশের মানুষই কিন্তু ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ধ্বংসস্তুপ থেকে ফিনিক্স পাখির মতো উড়ে গেছে। আমাদের সেইভাবে এগোতে হবে।’
বিএনপি মহাসচিব দাবি করেন, ‘স্বাধীন বাংলাদেশের পর সত্যিকার অর্থে গণতন্ত্রের জন্য যদি কাউকে সবচেয়ে বেশি কৃতিত্ব দেয়া যায়, সেটা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে। দেখুন আপনারা, সংগ্রামের মধ্য দিয়ে তার রাজনীতিতে আসা। সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এই বয়সেও তিনি কারাগারে। এই সরকার কী বলব, বলার ভাষাই নেই আমাদের। নির্লজ্জ! তাকে উপযুক্ত চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না। ভাবখানা এমন যদি এভাবেই শেষ হয়ে যায় তাহলে আপদ গেল। কারণ ক্ষমতায় আসার প্রধান বাধা হলো খালেদা জিয়া।’

তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া এখনও জনপ্রিয় নেত্রী, গণতন্ত্রের নেত্রী। তিনি যে বাঁশি বাজাবেন সেই বাঁশিতে হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ মানুষ রাজপথে নামবে। এটা আমরা বিশ্বাস করি এবং এটা ঘটবে, এজন্য তারা এভাবে তাকে আটকে রেখেছে। ’
জাতীয় ঐক্য প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যারা বাংলাদেশের রাজনীতির প্রথম থেকেই অবদান রাখছেন তাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াও কারাগারে যাওয়ার আগে বলেছিলেন যে, জাতীয় ঐক্য চাই। আমি এটা বিশ্বাস করি এবং বেশি জোর দিতে চাই। বাংলাদেশের এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য একটা জাতীয় ঐক্য খুব দরকার। খুব বেশি পয়েন্ট নয়, কয়েকটা পয়েন্টেই আমরা সেই ঐক্য সৃষ্টি করতে পারি এবং গণতান্ত্রিক দল হিসেবে আমরা অবশ্যই নির্বাচন চাই।’

যোগাযোগ

Editor:Sahadul Suhed, News Editor:Loukman Hossain E-mail: news.spainbangla@gmail.com