ইব্রাহীম খলিল: এখন স্পেনে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সুদিনের হাওয়া বইছে। এই সুদিন আমাদের বহু দিনের আকাঙ্খার ফসল। পাকিস্তানি শাসকদের বিরুদ্ধে ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে গন আন্দোলন ও সর্বশেষে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশ স্বাধীন করেছে, জন্ম দিয়েছে একটি নতুন দেশ ও নতুন পতাকার। এই স্বাধীন দেশের জন্ম দেওয়ার জন্য যাঁর নাম ইতিহাসে স্বর্নাক্ষরে রয়ে যাবে- তিনি মুক্তিযুদ্ধের মহান নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
এ দেশ স্বাধীন হওয়ার পথটা সহজ ছিলোনা। তৎকালীন বাংলাদেশের কিছু স্বার্থান্বেষী মহল পাকিস্তানিদের তাবেদার ও চাটুকার ছিলো। আমাদের দেশের জনগনের উপর পাকিস্তানিদের শোষণ ও নির্যাতন যখন চরমে ওঠে; তখন প্রতিবাদী হয়ে ওঠে কৃষক, শ্রমিক, সাধারণ জনতা ও শিক্ষিত মহল। তাদের দমন করার জন্য দেশদ্রোহী রাজাকার, আলবদর ও আল সামস পাকিস্তানিদের সাথে হাত মিলিয়েছিলো। তাদের সহযোগিতায় পাকিস্তানিরা এদেশে গনহত্যা চালিয়েছে, ধ্বংস করেছে সকল বৃহত্তর স্থাপনা এবং দেশের জ্ঞানী, গুণী ও বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে।
স্বাধীনতা উত্তর কালে এসব রাজাকার ও তাদের সন্তানেরা ইংল্যান্ড, জার্মানি, ইটালিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছে এবং মসজিদ কেন্দ্রীক রাজনীতির মাধ্যমে কলেবরে প্রসারিত করেছে। তার সাথে যোগ হয়েছে বঙ্গবন্ধুর খুনি, তাদের স্বজন ও সকল প্রতিক্রিয়াশীল চিন্তা ও মতাদর্শের লোকজন। এ জন্যই ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এই প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী ও তাদের সাঙ্গপাঙ্গরা অনেক বেশি শক্তিশালী এবং তারা সর্বদাই ইউরোপে তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
ইউরোপে আওয়ামী রাজনীতির পথ পরিক্রমা ছিল বড়ই কঠিন। প্রতিক্রিয়াশীলদের দাপটে এমন হয়ে ওঠেছিলো যে, কারো পক্ষে মুখ দিয়ে আওয়ামী লীগের নাম উচ্চারণ করাও সম্ভব ছিলোনা। তবুও সাহসীরা মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। মাদ্রিদে আওয়ামী লীগের সভা ও সেমিনারে বিএনপি, জামায়াত-ইসলামী ফোরাম ও কট্টর পন্থীরা সর্বদাই হুমকি ধামকি দিয়েছে, বারবার আক্রমণ করেছে, আওয়ামী লীগের কর্মীদের আহত ও পঙ্গু করেছে ও নানা অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে।
অতি দু:খের বিষয় এই যে, বঙ্গবন্ধু দুহিতা দেশরতœ ও আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ইউরোপের কোন দেশে প্রবেশ করলে,একাত্তরের ঘাতকদের বংশধর সব একত্রিত হয়ে সেই দেশে গিয়ে তারা প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অশালীন ভাষায় শ্লোগান দেয়। স্পেন থেকে কতিপয় প্রতিক্রিয়াশীল ঘাতক ও দালালচক্র এসব অপকর্মে সর্বদাই সোচ্চার। এরা যখন স্পেন থেকে দল বেঁধে গিয়ে অশালীন বক্তব্য দেয়, মেনিফেস্টেশন করে, আবার মসজিদ কমিটির নেতার পদ ধরে রাখে, তা সত্যিই সেলুকাস!
কোন মন্ত্রী, এমপি ও আওয়ামী লীগের নেতা ইউরোপে এলেও নাজেহাল করতো এসব স্বার্থান্বেষী আওয়ামী বিরোধীরা। বাংলাদেশের মান্যবর রাষ্ট্রদূত যখন স্পেনে নিযুক্ত হয়ে আসেন, এসব প্রতিক্রিয়াশীল চক্র তার বিরুদ্ধেও মাদ্রিদে মিছিল, পিকেটিং ও মেনিফেস্টেশন করে।
মাদ্রিদের আওয়ামী লীগের ত্যাগী সকল নেতা কর্মীরা অবগত আছেন, কত কঠিন বাস্তবতার ভেতর দিয়ে, নানা প্রতিকূলতায় কত ধরনের ঝুঁকি মাথায় নিয়ে তারা স্পেনে রাজনৈতিক কর্মকা- চালিয়ে গেছেন। আওয়ামী লীগের নামটি মুখে উচ্চারণ করা যেতনা। ইসলামী ফোরামের এক সময়ের সভাপতি, তৎকালীন মসজিদ কমিটির সেক্রেটারি ও মসজিদ বিক্রি করে কোটি টাকা নিয়ে পলাতক
আসামী প্রকাশ্য মিটিংয়ে আওয়ামী লীগকে অমুসলিম বলে বেড়াতো। তার এসব কথার প্রভাব ভাইরাসের মত ছড়িয়েছিলো। কারন মসজিদের মিম্বর থেকে শুরু করে পাবলিক জনসভায় তার ব্যাপক প্রভাব ছিলো। মাদ্রিদের বাসা বাড়িতে যেখানে ব্যাচেলর থাকতো; প্রায় প্রতিটি ঘরে আওয়ামী কর্মীরা কোনঠাসা হয়ে পড়েছিলো। বাসা বাড়ীতেও আওয়ামী লীগের নাম উচ্চারণ করা যেত না। যারা মাদ্রিদে নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত করেছেন, তাদের মুল্যায়ন করতে হবে। তাদের ছোট করে দেখা ঠিক হবেনা।
এখন নেতৃত্বের হালুয়া রুটির আশায় অনেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে অনুপ্রবেশ করেছে। এই রাজনীতির পরিচয় ও তকমা লাগিয়ে ফায়দা হাসিলের মহা পরিকল্পনায়ও অনেকে স্বপ্নে বিভোর। ব্যবসা, লাইসেন্স পারমিট ও দালালি করার কথাও অনেকের মাথায় কুটিল বুদ্ধির মত ঘুরপাক খাচ্ছে। মাদ্রিদে আওয়ামী রাজনীতির তল্লাটে যাদের একেবারেই দেখা যায়নি; তারা আজ নেতা হওয়ার জন্য ওঠেপড়ে লেগেছেন।
সাংবাদিকদের মধ্যে যারা দীর্ঘদিন আওয়ামী রাজনীতির বিপক্ষে ছিলো, আজ তারা ভোল পাল্টিয়েছে। জননেত্রীর বিরুদ্ধে যারা লেখালেখি করতো, যারা এতকাল আওয়ামী রাজনীতির ছায়াও মাড়ায়নি, যারা একাত্তরের ঘাতক দালালদের পক্ষে সংবাদ পরিবেশন করেছে; তারাও এসে ভর করেছে। এসব বর্নচোরা সাংবাদিক, যারা সময়ের স্রোতে গা ভাসিয়ে ফায়দা লুটছে, তাদের কেন আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ সমাবেশে সন্নিবেশিত করা হয়- আশংকা প্রকাশ করছেন আওয়ামী লীগের আদর্শবান ও ত্যাগী নেতা কর্মীরা।
দীর্ঘদিন যারা জামায়াত চক্রের প্রচারণায় ব্রত ছিলো; তারা সূঁচ হয়ে আওয়ামী রাজনীতির অঙ্গনে এসে ঢুকছে। তারা জল ঘোলাটে করে নেতৃত্বের একতায় ফাটল ধরাচ্ছে। আওয়ামী লীগের সকল বোনাফাইট নেতা থেকে শুরু করে তৃনমুল কর্মী পর্যন্ত সবাই এসব বর্ণচোরাদের চেনা সত্বেও মুখে কুলুপ এঁটে বসে থাকা বড় ধরনের অন্যায়।
ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে ওঠা ও হঠাৎ আমদানি হওয়া তথাকথিত নেতাদের অর্থের যোগান দেখে হতাশ হবেন না। এরা মৌ-লোভী। অবৈধ অর্থবৃত্তশালী, প্রতাপশালী, ভূঁইফোড়, পেটি বুর্জুয়া, মুৎসুদ্দি, দালাল ও তোষামোদকারীরা কখনো আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলোনা। নেতা হওয়ার যোগ্যতা তারা রাখে না। কোন নেতৃত্ব টাকার কাছে বিকিয়ে দেবেন না। রাজনৈতিক আদর্শ বর্জিত ক্যামেরাওয়ালা সাংবাদিকরা তাদের তাবেদারি করছে, তাদের প্রচারণায় লিপ্ত হচ্ছে এবং এই তথাকথিত সাংবাদিকেরা প্রাধান্য বিস্তার করে নতুন ফন্দি ফিকির শুরু করছে। মাদ্রিদের আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ সভায় আর কখনো যুদ্ধাপরাধী ঘাতক-দালালদের সমর্থনকারীদের প্রেতাতœার অনুপ্রবেশ নিষিদ্ধ করা সময়ের দাবী।
অনেক ত্যাগের বিনিময়ে স্পেনে আওয়ামী লীগের রাজনীতির উত্থান ঘটেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অক্লান্ত চেষ্টায় দেশ বিদেশে তার রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত হতে চলেছে। এ রাজনীতির সুফল নিয়ে আসতে হলে সবাইকে আন্তরিক হতে হবে এবং হৃদয়ে দেশপ্রেম ধারণ করতে হবে। প্রবাসেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিকাশ, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও গবেষণার চর্চা অব্যাহত রাখতে হবে।
দেশ ও জাতির উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হলে বিত্তশালীদের তুলনায় সজ্জন ব্যক্তিদের বেশি প্রাধান্য দিতে হবে। দেশপ্রেম, চেতনা ও মেধার যথাযথ প্রয়োগ দ্বারা দেশ পরিবর্তন করা সম্ভব। রাজনীতিতে মুশতাকদের চিনতে হবে। স্পেনের সকল নেতা কর্মীদের সতর্ক থাকতে হবে এবং বুঝতে হবে কারা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সুদিনে দুধে মাছি হয়ে আবির্ভুত হয়েছে। কারা হাইব্রিড নেতা এবং কারা জামায়াতের পকেট সাংবাদিক দিয়ে নিজেদের প্রচারণায় মাঠ গরম করেছে; তাদের অবশ্যই ঠেকাতে হবে।
আপনাদের অজানা নয়, কারা জামায়াতের পোষ্য সাংবাদিক। এদের দমনে আপনাদের তৎপর হতে হবে।
হঠাৎ করে অর্থ ব্যয় করে গজিয়ে ওঠা নেতা, কাগজের দালাল, পাসপোর্টের দালাল, লবিংয়ের ওস্তাদ সকল গণ বিচ্ছিন্ন তথাকথিত রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে না দাঁড়ালে আমাদের বিপাকে পড়তে হবে এবং দেশ বিদেশের সকলের জন্য অমঙ্গল হবে। জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস। সজাগ হতে হবে তৃনমূল কর্মীদের।
লেখক: কবি ও পরিচালক, দেশকণ্ঠ টিভি।
এ দেশ স্বাধীন হওয়ার পথটা সহজ ছিলোনা। তৎকালীন বাংলাদেশের কিছু স্বার্থান্বেষী মহল পাকিস্তানিদের তাবেদার ও চাটুকার ছিলো। আমাদের দেশের জনগনের উপর পাকিস্তানিদের শোষণ ও নির্যাতন যখন চরমে ওঠে; তখন প্রতিবাদী হয়ে ওঠে কৃষক, শ্রমিক, সাধারণ জনতা ও শিক্ষিত মহল। তাদের দমন করার জন্য দেশদ্রোহী রাজাকার, আলবদর ও আল সামস পাকিস্তানিদের সাথে হাত মিলিয়েছিলো। তাদের সহযোগিতায় পাকিস্তানিরা এদেশে গনহত্যা চালিয়েছে, ধ্বংস করেছে সকল বৃহত্তর স্থাপনা এবং দেশের জ্ঞানী, গুণী ও বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে।
স্বাধীনতা উত্তর কালে এসব রাজাকার ও তাদের সন্তানেরা ইংল্যান্ড, জার্মানি, ইটালিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছে এবং মসজিদ কেন্দ্রীক রাজনীতির মাধ্যমে কলেবরে প্রসারিত করেছে। তার সাথে যোগ হয়েছে বঙ্গবন্ধুর খুনি, তাদের স্বজন ও সকল প্রতিক্রিয়াশীল চিন্তা ও মতাদর্শের লোকজন। এ জন্যই ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এই প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী ও তাদের সাঙ্গপাঙ্গরা অনেক বেশি শক্তিশালী এবং তারা সর্বদাই ইউরোপে তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
ইউরোপে আওয়ামী রাজনীতির পথ পরিক্রমা ছিল বড়ই কঠিন। প্রতিক্রিয়াশীলদের দাপটে এমন হয়ে ওঠেছিলো যে, কারো পক্ষে মুখ দিয়ে আওয়ামী লীগের নাম উচ্চারণ করাও সম্ভব ছিলোনা। তবুও সাহসীরা মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। মাদ্রিদে আওয়ামী লীগের সভা ও সেমিনারে বিএনপি, জামায়াত-ইসলামী ফোরাম ও কট্টর পন্থীরা সর্বদাই হুমকি ধামকি দিয়েছে, বারবার আক্রমণ করেছে, আওয়ামী লীগের কর্মীদের আহত ও পঙ্গু করেছে ও নানা অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে।
অতি দু:খের বিষয় এই যে, বঙ্গবন্ধু দুহিতা দেশরতœ ও আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ইউরোপের কোন দেশে প্রবেশ করলে,একাত্তরের ঘাতকদের বংশধর সব একত্রিত হয়ে সেই দেশে গিয়ে তারা প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অশালীন ভাষায় শ্লোগান দেয়। স্পেন থেকে কতিপয় প্রতিক্রিয়াশীল ঘাতক ও দালালচক্র এসব অপকর্মে সর্বদাই সোচ্চার। এরা যখন স্পেন থেকে দল বেঁধে গিয়ে অশালীন বক্তব্য দেয়, মেনিফেস্টেশন করে, আবার মসজিদ কমিটির নেতার পদ ধরে রাখে, তা সত্যিই সেলুকাস!
কোন মন্ত্রী, এমপি ও আওয়ামী লীগের নেতা ইউরোপে এলেও নাজেহাল করতো এসব স্বার্থান্বেষী আওয়ামী বিরোধীরা। বাংলাদেশের মান্যবর রাষ্ট্রদূত যখন স্পেনে নিযুক্ত হয়ে আসেন, এসব প্রতিক্রিয়াশীল চক্র তার বিরুদ্ধেও মাদ্রিদে মিছিল, পিকেটিং ও মেনিফেস্টেশন করে।
মাদ্রিদের আওয়ামী লীগের ত্যাগী সকল নেতা কর্মীরা অবগত আছেন, কত কঠিন বাস্তবতার ভেতর দিয়ে, নানা প্রতিকূলতায় কত ধরনের ঝুঁকি মাথায় নিয়ে তারা স্পেনে রাজনৈতিক কর্মকা- চালিয়ে গেছেন। আওয়ামী লীগের নামটি মুখে উচ্চারণ করা যেতনা। ইসলামী ফোরামের এক সময়ের সভাপতি, তৎকালীন মসজিদ কমিটির সেক্রেটারি ও মসজিদ বিক্রি করে কোটি টাকা নিয়ে পলাতক
আসামী প্রকাশ্য মিটিংয়ে আওয়ামী লীগকে অমুসলিম বলে বেড়াতো। তার এসব কথার প্রভাব ভাইরাসের মত ছড়িয়েছিলো। কারন মসজিদের মিম্বর থেকে শুরু করে পাবলিক জনসভায় তার ব্যাপক প্রভাব ছিলো। মাদ্রিদের বাসা বাড়িতে যেখানে ব্যাচেলর থাকতো; প্রায় প্রতিটি ঘরে আওয়ামী কর্মীরা কোনঠাসা হয়ে পড়েছিলো। বাসা বাড়ীতেও আওয়ামী লীগের নাম উচ্চারণ করা যেত না। যারা মাদ্রিদে নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত করেছেন, তাদের মুল্যায়ন করতে হবে। তাদের ছোট করে দেখা ঠিক হবেনা।
এখন নেতৃত্বের হালুয়া রুটির আশায় অনেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে অনুপ্রবেশ করেছে। এই রাজনীতির পরিচয় ও তকমা লাগিয়ে ফায়দা হাসিলের মহা পরিকল্পনায়ও অনেকে স্বপ্নে বিভোর। ব্যবসা, লাইসেন্স পারমিট ও দালালি করার কথাও অনেকের মাথায় কুটিল বুদ্ধির মত ঘুরপাক খাচ্ছে। মাদ্রিদে আওয়ামী রাজনীতির তল্লাটে যাদের একেবারেই দেখা যায়নি; তারা আজ নেতা হওয়ার জন্য ওঠেপড়ে লেগেছেন।
সাংবাদিকদের মধ্যে যারা দীর্ঘদিন আওয়ামী রাজনীতির বিপক্ষে ছিলো, আজ তারা ভোল পাল্টিয়েছে। জননেত্রীর বিরুদ্ধে যারা লেখালেখি করতো, যারা এতকাল আওয়ামী রাজনীতির ছায়াও মাড়ায়নি, যারা একাত্তরের ঘাতক দালালদের পক্ষে সংবাদ পরিবেশন করেছে; তারাও এসে ভর করেছে। এসব বর্নচোরা সাংবাদিক, যারা সময়ের স্রোতে গা ভাসিয়ে ফায়দা লুটছে, তাদের কেন আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ সমাবেশে সন্নিবেশিত করা হয়- আশংকা প্রকাশ করছেন আওয়ামী লীগের আদর্শবান ও ত্যাগী নেতা কর্মীরা।
দীর্ঘদিন যারা জামায়াত চক্রের প্রচারণায় ব্রত ছিলো; তারা সূঁচ হয়ে আওয়ামী রাজনীতির অঙ্গনে এসে ঢুকছে। তারা জল ঘোলাটে করে নেতৃত্বের একতায় ফাটল ধরাচ্ছে। আওয়ামী লীগের সকল বোনাফাইট নেতা থেকে শুরু করে তৃনমুল কর্মী পর্যন্ত সবাই এসব বর্ণচোরাদের চেনা সত্বেও মুখে কুলুপ এঁটে বসে থাকা বড় ধরনের অন্যায়।
ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে ওঠা ও হঠাৎ আমদানি হওয়া তথাকথিত নেতাদের অর্থের যোগান দেখে হতাশ হবেন না। এরা মৌ-লোভী। অবৈধ অর্থবৃত্তশালী, প্রতাপশালী, ভূঁইফোড়, পেটি বুর্জুয়া, মুৎসুদ্দি, দালাল ও তোষামোদকারীরা কখনো আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলোনা। নেতা হওয়ার যোগ্যতা তারা রাখে না। কোন নেতৃত্ব টাকার কাছে বিকিয়ে দেবেন না। রাজনৈতিক আদর্শ বর্জিত ক্যামেরাওয়ালা সাংবাদিকরা তাদের তাবেদারি করছে, তাদের প্রচারণায় লিপ্ত হচ্ছে এবং এই তথাকথিত সাংবাদিকেরা প্রাধান্য বিস্তার করে নতুন ফন্দি ফিকির শুরু করছে। মাদ্রিদের আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ সভায় আর কখনো যুদ্ধাপরাধী ঘাতক-দালালদের সমর্থনকারীদের প্রেতাতœার অনুপ্রবেশ নিষিদ্ধ করা সময়ের দাবী।
অনেক ত্যাগের বিনিময়ে স্পেনে আওয়ামী লীগের রাজনীতির উত্থান ঘটেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অক্লান্ত চেষ্টায় দেশ বিদেশে তার রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত হতে চলেছে। এ রাজনীতির সুফল নিয়ে আসতে হলে সবাইকে আন্তরিক হতে হবে এবং হৃদয়ে দেশপ্রেম ধারণ করতে হবে। প্রবাসেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিকাশ, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও গবেষণার চর্চা অব্যাহত রাখতে হবে।
দেশ ও জাতির উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হলে বিত্তশালীদের তুলনায় সজ্জন ব্যক্তিদের বেশি প্রাধান্য দিতে হবে। দেশপ্রেম, চেতনা ও মেধার যথাযথ প্রয়োগ দ্বারা দেশ পরিবর্তন করা সম্ভব। রাজনীতিতে মুশতাকদের চিনতে হবে। স্পেনের সকল নেতা কর্মীদের সতর্ক থাকতে হবে এবং বুঝতে হবে কারা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সুদিনে দুধে মাছি হয়ে আবির্ভুত হয়েছে। কারা হাইব্রিড নেতা এবং কারা জামায়াতের পকেট সাংবাদিক দিয়ে নিজেদের প্রচারণায় মাঠ গরম করেছে; তাদের অবশ্যই ঠেকাতে হবে।
আপনাদের অজানা নয়, কারা জামায়াতের পোষ্য সাংবাদিক। এদের দমনে আপনাদের তৎপর হতে হবে।
হঠাৎ করে অর্থ ব্যয় করে গজিয়ে ওঠা নেতা, কাগজের দালাল, পাসপোর্টের দালাল, লবিংয়ের ওস্তাদ সকল গণ বিচ্ছিন্ন তথাকথিত রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে না দাঁড়ালে আমাদের বিপাকে পড়তে হবে এবং দেশ বিদেশের সকলের জন্য অমঙ্গল হবে। জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস। সজাগ হতে হবে তৃনমূল কর্মীদের।
লেখক: কবি ও পরিচালক, দেশকণ্ঠ টিভি।