Latest News

Showing posts with label ইউরোপ. Show all posts
Showing posts with label ইউরোপ. Show all posts

মাদ্রিদে ‘বাংলাদেশে স্প্যানিশ কোম্পানি জন্য ব্যবসায়িক সুযোগ সুবিধা’ শীর্ষক সেমিনার

এসবিএন ডেস্ক : স্পেনের  মাদ্রিদে ‘বাংলাদেশে স্প্যানিশদের  বিনোয়োগ ও ব্যবসায়িক সুযোগ সুবিধা’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এশিয়ান ভিত্তিক সংগঠন ‘কাসা এশিয়া’ ও বাংলাদেশ দূতাবাস যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে। গতকাল (২৩ ফেব্রুয়ারি) বৃহস্পতিবার কাসা এশিয়া‘র হলরুমে আয়োজিত এ সেমিনারে মূল বক্তব্য দেন স্পেনে নিযুক্ত বাংলাশের রাষ্ট্রদূত হাসান মাহমুদ খন্দকার। স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টায় অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে স্পেনের পররাষ্ট্র বিভাগ, চেম্বার অব কমার্স, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, বিদেশে বিনোয়োগকারী প্রতিষ্ঠান, কাসা এশিয়া ও বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ দূতাবাসের কমার্সিয়াল কাউন্সিলর মোহাম্মদ নাভিদ শাফিউল্লাহর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত এ  সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কাসা এশিয়া‘র ডিরেক্টর জেনারেল রামন মারিয়া মরেনো।  পরে   বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হাসান মাহমুদ খন্দকার বাংলাদেশে স্প্যানিশদের  বিনোয়োগ ও ব্যবসায়িক সুযোগ সুবিধা নিয়ে মূল বক্তব্য প্রদান করেন।
তিনি বাংলাদেশের সাথে স্পেনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক খুবই ভালো আছে উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশে জ্বালানি, পরিবহন, অবকাঠামো, টেলিযোগাযোগ, পানি ও স্যানিটেশন, শিক্ষা, কৃষি, পর্যটনসহ বিভিন্ন খাতে স্প্যানিশ বিনিয়োগ রয়েছে। দ্বিপাক্ষিক সু সম্পর্কের কারণেই বাংলাদেশের পোষাক রপ্তানিকরণ গন্তব্য হিসেবে স্পেন এখন বৈশ্বিকভাবে চতুর্থ ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে তৃতীয় অবস্থানে আছে। স্পেন প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১ দশমিক ৯ বিলিয়ন ইউরোর পোষাক সামগ্রী ক্রয় করে থাকে। দক্ষিণ এশিয়ায় স্পেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম আমদানি বাজার হচ্ছে বাংলাদেশ। সে অবস্থান আরো উন্নত হবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।

রাষ্ট্রদূত হাসান মাহমুদ খন্দকার বৈদেশিক বিনোয়েগের জন্য বাংলাদেশকে একটি উপযুক্ত দেশ হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, বৈদেশিক  বিনোয়োগকারীদের বিনোয়োগ যাতে সুরক্ষিত  থাকে, সেজন্য বাংলাদেশ সরকারের নির্দেশনা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নিজেই এর তদারকি করে থাকেন। স্প্যানিশ কোম্পানি সেমেন্তস মলিন্স, ইসোলাক্স করসা, কোবরা,  রোকা, আজবিল  টেলস্টার, টিএসকেসহ অনেকগুলো কোম্পানি বাংলাদেশে কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনোয়োগ সুরক্ষিত রাখার জন্য আইনও রয়েছে।

পোষাক পণ্যের পাশাপাশি বাংলাদেশের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট সামগ্রী, ওষুধ পণ্য, সিরামিক সামগ্রী, হিমায়িত খাবার, মাছ ও কৃষিজাত পণ্য সামগ্রীর কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত ঐসব পণ্যসামগ্রী স্পেনে  বাজারজাত করার জন্য ব্যবসায়ীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
বাংলাদেশের বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপনকালে রাষ্ট্রদূত হাসান মাহমুদ খন্দকার  বলেন, জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য বাংলাদেশ একটি উপযুক্ত স্থান। বিশ্বের বৃহত্তম বদ্বীপ বাংলাদেশে রয়েছে দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত, বৃহত্তম মনগ্রোভ বন । বাংলাদেশ ভ্রমণে বাংলাদেশ দূতাবাস সহজ ও দ্রুত ভিসা প্রদান করে থাকে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বক্তব্য প্রদান শেষে প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।  সেমিনারে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন মিনিস্টার ও হেড অব চ্যান্সেরি এম হারুন আল রাশিদ ও ফার্স্ট সেক্রেটারি (লেবার উইং) মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম।

স্পেন ভেঙে স্বাধীনতা চায় কাতালোনিয়া : ইউরোপের দুশ্চিন্তা

পার্থ প্রতীম দাস : ইউরোপের ফুটবল অঙ্গনের সবচেয়ে আকর্ষণীয় লড়াই- স্পেনের দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনার দ্বৈরথ। বিশ্ব ফুটবলে যা পরিচিত এল ক্লাসিকো নামে। ইউরোপের সবচেয়ে সফল দুটি ক্লাবও রিয়াল-বার্সা। ফলে ফুটবলের কারণে বছরজুড়েই বিশ্বের অনেক মানুষের নজর থাকে স্পেনের দিকে। এবার বিশ্বের দৃষ্টি স্পেনের দিকে পড়তে পারে রাজনৈতিক কারণেও। এখানেও একে-অপরের প্রবল প্রতিপক্ষ মাদ্রিদ (স্পেন) ও বার্সেলোনা (কাতালোনিয়া)।
সম্প্রতি দীর্ঘদিন ধরে জারি থাকা স্বাধীনতার দাবিতে আবার মুখরিত হয়েছে কাতালোনিয়ার রাজপথ। ২৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কাতালোনিয়ার পার্লামেন্ট নির্বাচন। আর এই ভোটাভুটিকে দেখা হচ্ছে স্বাধীনতার পক্ষ-বিপক্ষ নির্ধারণী নির্বাচন হিসেবে। পার্লামেন্ট নির্বাচনে কাতালোনিয়ার স্বাধীনতার পক্ষ জয়ী হলে জোরতালে শুরু হবে স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কর্মকাণ্ড। বার্সেলোনা হবে সেই নতুন দেশের রাজধানী।অন্যদিকে সমূহ বিপদের আশঙ্কায় কাতালানদের এই দাবি মেনে নিতে নারাজ স্প্যানিশ সরকার। কাতালোনিয়া স্বাধীন হয়ে গেলে খুবই ঝুঁকির মুখে পড়ে যাবে আগে থেকেই টালমাটাল অবস্থার মধ্যে থাকা স্প্যানিশ অর্থনীতি। খুব কাছেই সতর্কবার্তা হয়ে ঝুলে আছে গ্রিস ট্র্যাজেডি। গ্রিসের মতো ঋণগ্রস্ত স্পেনও আছে দেউলিয়া ঘোষণা হওয়ার আশঙ্কায়। স্পেনের পাশাপাশি ইউরোপের মোড়লরাও হয়তো চাইবেন না কাতালোনিয়ার আলাদা হয়ে যাওয়া। কারণ তাহলে নতুন করে আরেকটি বড় সংকটের মধ্যে পড়তে হবে ইউরোপের নীতিনির্ধারকদের।

এমনিতেই গ্রিস ও সাম্প্রতিক অভিবাসী পরিস্থিতি বেশ জর্জরিত করে রেখেছে তাদের। কিন্তু কাতালানরাও নাছোড়বান্দা। বহু দিনের লালিত স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাকে এবার বাস্তবে রূপ দিতে বদ্ধপরিকর কাতালোনিয়ার মুক্তিকামী মানুষ।
১১৬৪ সাল পর্যন্ত খুবই শক্তিশালী একটি স্বাধীন রাষ্ট্র ছিল কাতালোনিয়া। তারপর এটি যুক্ত হয় অ্যারাগনের সঙ্গে। আর ১৪৬৯ সালে অ্যারাগনের রাজা ফার্দিনান্দ ও স্পেনের রানী ইসাবেলার বিবাহবন্ধনের মধ্য দিয়ে স্পেনের সঙ্গে মিলন ঘটে অ্যারাগন ও কাতালোনিয়ার। তখন থেকেই ধীরে ধীরে স্পেনের কেন্দ্রীয় শাসনের নিয়ন্ত্রণে চলে যেতে থাকে কাতালানরা। ১৭১৪ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিলুপ্ত করে দেওয়া হয় কাতালান রাষ্ট্র। তারপর থেকেই নিজেদের স্বকীয় সংস্কৃতি-ঐতিহ্য-ভাষা চর্চার স্বাধীনতা হারাতে হয়েছে বলে অভিযোগ কাতালোনিয়ার মানুষদের। যে নিপীড়ণের চরম রূপ দেখা গিয়েছে জেনারেল ফ্রাঙ্কোর সামরিক শাসনের (১৯৩৯-১৯৭৫) সময়। ১৯৭০ এর দশকের শেষে স্পেনে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর কাতালোনিয়াকে দেওয়া হয় স্পেনের ১৭টি স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চলের মর্যাদা। তবে ভেতরে ভেতরে স্বাধীনতার সুপ্ত বাসনাটাও সবসময় লালন করে গেছে কাতালানরা। সেই দাবি আরও জোড়ালো হয়েছে ২০০৭-০৮ সালের অর্থনৈতিক ধ্বসের পর। নানাবিধ কৃচ্ছ্রতানীতি যারপরনাই অসন্তোষ তৈরি করেছে কাতালোনিয়ায়। ২০১০ সালে কাতালানরা স্প্যানিশ সরকারকে কর দিয়েছে ৬১.৮৭ বিলিয়ন ইউরো। আর তাদের কাছে এসেছে ৪৫.৩৩ বিলিয়ন। কেন্দ্রীয় স্প্যানিশ সরকারের হাতে বিপুল পরিমাণ টাকা চলে না গেলে আরও উন্নয়ন করা যেত বলে কড়া মন্তব্য করেছিল কাতালোনিয়া সরকার।
গত বছরের নভেম্বরে কাতালোনিয়ার স্বাধীনতা নিয়ে আয়োজন করা হয়েছিল একটি অনানুষ্ঠানিক গণভোট। মাদ্রিদে স্পেনের কেন্দ্রীয় সরকার অনেক চেষ্টা করেছিল সেটা রুখে দিতে। কিন্তু শেষপর্যন্ত সফল হয়নি। ২.২ মিলিয়ন ভোটারের ভোটে বিপুলভাবে জয়ী হয়েছিল স্বাধীনতার দাবি। ৮০.৭ শতাংশ মানুষ ভোট দিয়েছিলেন কাতালোনিয়ার স্বাধীনতার পক্ষে।
এবারের পার্লামেন্ট নির্বাচনে অনেকখানি আনুষ্ঠানিক রূপ পেতে যাচ্ছে সেই স্বাধীনতার দাবি। কাতালোনিয়ান পার্লামেন্টের ১৩৫টি আসনের মধ্যে ৬৮টি আসনে জয়লাভ করলেই স্পেন থেকে পৃথক হওয়ার কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করে দেবে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিরা। ইতিমধ্যে তারা গঠন

করেছে জান্টস পেল সি বা টুগেদার ফর ইয়েস নামের একটি জোট। যেখানে আছে কাতালোনিয়ার বর্তমান ও সাবেক তিন প্রধানমন্ত্রীর পার্টি। এই জোট থেকে নির্বাচনে দাঁড়াচ্ছেন বার্সেলোনার সাবেক কোচ পেপ গার্দিওলাও। এই জোটের সঙ্গে আলাদাভাবে কাজ করবে বামপন্থী দল সিইউপি। আর স্বাধীনতার বিপক্ষে লড়বে স্পেনের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মারিনো রাহোর পার্টি পার্তিদো পপুলার (পিপি) ও কাতালোনিয়ার সোশ্যালিস্ট পার্টি (পিএসসি)।
২৭ সেপ্টেম্বরের নির্বাচনে জয়ী হলে দ্রুতই স্বাধীন হওয়ার কাজ শুরু করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন টুগেদার ফর ইয়েস জোটের প্রার্থী রাউল রোমেভা। এল পাইস পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, আমরা স্বাধীনতার ব্যাপারে খুবই আন্তরিক। আর সবাইকে এটা বুঝতে হবে যে আমরা সত্যিই এই প্রক্রিয়া শুরু করব। আমরা সম্ভাব্য সব উপায়ে এটা করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু তারা (স্পেনের কেন্দ্রীয় সরকার) এটা আমাদের করতে দেয়নি। ২০১৪ সালের ৯ নভেম্বরের গণভোটের পর আমরা যেটা করতে পারিনি সেটা করার সময় এবার এসে গেছে। নিজেদের স্বাধীন সব প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হবে বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন কাতালোনিয়ার প্রেসিডেন্ট আর্থার মাস। কেন্দ্রীয় ব্যাংক, কর কর্তৃপক্ষ, কূটনৈতিক প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ছোট আকারের একটা সেনাবাহিনীও গড়ে তোলার কথা ভাবছেন মাস।
গত ১১ সেপ্টেম্বর কাতালোনিয়ার জাতীয় দিবসে বার্সেলোনার রাজপথ আবার মুখরিত হয়েছিল স্বাধীনতার দাবিতে। প্রায় ১.৪ মিলিয়ন মানুষ কাতালোনিয়ার পতাকা নিয়ে বর্ণিল র‍্যালি করেছিলেন বার্সেলোনার রাজপথে। তরুণ তরুণীরা নেচে গেয়ে উদযাপন করেছিলেন কাতালানদের স্বকীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। স্বাধীনতার দাবিতে গলা চড়িয়েছেন অনেক প্রবীনও। ফ্রাঙ্কোর একনায়ক শাসনামলে স্বাধীনতার কথা বলতে গিয়ে দীর্ঘদিন জেল খাটতে হয়েছিল ৯১ বছর বয়সী জোয়াকিম ব্যাটলকে। এখন তিনি হাঁটেন ক্রাচে ভর দিয়ে। কিন্তু তাতে বিন্দুমাত্রও কমেনি তাঁর স্বাধীনতার স্পৃহা। ব্যাটল বলেছেন, আমি প্রবল আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে আছি কাতালোনিয়ার স্বাধীনতার দিকে। আমরা এ জন্য অনেক শতক ধরে অপেক্ষা করছি। আর আমার বিশ্বাস এখন সেই সময় চলে এসেছে।
২৭ সেপ্টেম্বরের নির্বাচনের পর স্পেন যদি সত্যিই স্বাধীনতার পথে হাঁটা শুরু করে তাহলে আবার বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে স্প্যানিশ অর্থনীতি। কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থমন্ত্রী লুইস ডি গুইনডোস অবশ্য সবাইকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছেন যে, এমন কিছু হওয়া কখনোই সম্ভব না। কিন্তু বিনিয়োগকারীরা এতে আস্থা পাবেন কি না, শেয়ারবাজারে অস্থিরতা শুরু হবে কি না, সেটা নিশ্চিত করে বলার উপায় নেই। কাতালোনিয়ার স্বাধীনতা তখন শুধু স্পেনের সমস্যা হয়ে থাকবে না। পুরো ইউরোপকেই আবার পড়তে হবে নতুন টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যে।

কাতালোনিয়ার স্বাধীনতা নতুন করে ভাবাবে ইউরোপিয়ান ফুটবল অঙ্গনকেও। কাতালোনিয়া স্বাধীন রাষ্ট্র হয়ে গেলে বার্সেলোনা-ভ্যালেন্সিয়ার মতো দলগুলো স্প্যানিশ লিগে খেলবে কি না, বার্সেলোনা ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নস লিগে অংশ নিতে পারবে কি না- ইত্যাদি প্রশ্ন ঝুলে আছে ইউরোপের মাথাব্যথার কারণ হয়ে।

স্বাধীন হতে কাতালোনিয়ায় গণভোট, স্পেনের আপত্তি

এসবিএন ডেস্ক : স্বাধীনতার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে স্পেনের কাতালোনিয়া অঞ্চলের প্রেসিডেন্টকে ভোটের মাধ্যমে অনুমোদন দিয়েছে কাতালোনিয়ার সংসদ। তবে, এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছে স্পেনের কেন্দ্রীয় সরকার। তারা এই বিষয়টিকে সাংবিধানিক আদালতে নেয়ার কথাও ঘোষণা দিয়েছে। আঞ্চলিক সংসদে ভোট দিয়ে স্পেন থেকে নিজেদের স্বাধীনতার দাবীর পক্ষে জোরালো মতামত জানিয়েছে কাতালোনিয়ার নীতিনির্ধারকেরা। স্বাধীনতা চেয়ে গণভোট আয়োজনের পক্ষে সংসদে ভোট দিয়েছে কাতালোনিয়ার মোট ১০৬জন সংসদ সদস্য। আর বিপক্ষে ভোট দিয়েছে মাত্র ২৮ জন। স্কটল্যান্ডে স্বাধীনতার প্রশ্নে গণভোট আয়োজনের মাত্র একদিন পরেই তারা এই সিদ্ধান্ত নিল। পার্লামেন্টের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, স্কটল্যান্ডের আদলেই ৯ নভেম্বর একটি গণভোটের আয়োজন করবেন কাতালোনিয়ার প্রেসিডেন্ট আর্থার ম্যাস। স্কটল্যান্ডের গণভোটের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেছেন, স্কটল্যান্ডের গণভোট কাতালোনিয়াকে স্বাধীনতার পথ দেখিয়েছে।

 মি. ম্যাস বলছেন, আমার মূল অঙ্গিকার হচ্ছে এই গণভোট আয়োজন করা, এটি সম্পন্ন করা এবং কাতালোনিয়ার মানুষকে তাদের ভোট দেবার সুযোগ করে দেয়া। তারপর তারা নিজেরাই নিজেদের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেবে। কিন্তু কাতালোনিয়ার এই পদক্ষেপকে সংবিধান বিরোধী আখ্যা দিয়েছে স্পেনের কেন্দ্রীয় সরকার। বিষয়টির ফয়সালা করতে তারা মঙ্গলবার স্পেনের সাংবিধানিক আদালতেও তুলতে যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে যে, আদালতে গণভোটের এই আয়োজনকে হয়তো স্থগিত করে দেয়া হতে পারে। স্পেনের সুদূর উত্তর-পূর্ব কোণে অবস্থিত কাতালোনিয়া অঞ্চলটি স্পেনের অন্যতম ধনী ও শিল্পোন্নত অঞ্চল যা ভাষা ও সংস্কৃতির দিক থেকে দেশটির অন্য অঞ্চলের চেয়ে আলাদা।

কৌশলগত অংশিদারিত্বের বিষয়ে মত বিনিময় করল চীন-রাশিয়া

এসবিএন ডেস্ক :  রাশিয়া সফররত চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সঙ্গে  মস্কো-বেইজিং কৌশলগত অংশিদারিত্বের বিষয় মত বিনিময় করেছেন। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আজ(মঙ্গলবার) এ কথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, রুশ-চীন কৌশলগত অংশিদারিত্বের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্র। তাই আন্তর্জাতিক বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার বিষয়টি বিশেষ ভাবে নজর দেয়া হবে। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক অনেক ফোরাম বিশেষ করে জাতিসংঘ, সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা, বিআরআইসিএস, এপিইসিসহ মস্কো-বেইজিং সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। বিশ্বের এবং আঞ্চলিক চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা এবং  বিশ্ব অর্থনীতির টেকসই উন্নয়ন জন্য যৌথ প্রয়াসের কার্যকারিতা বাড়ানোর ওপর গুরত্বারোপ করেছে উভয়পক্ষ। সের্গেই ল্যাভরভের আমন্ত্রণে আজ মস্কো গেছেন ওয়াং। আগামি মাসের ৯ তারিখে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর মস্কো সফরের আগে রাশিয়া সফর করছেন তিনি।

স্প্যানিশদের সম্পর্কে ৯টি ভুল ধারণা!

ফ্ল্যামেঙ্কোর জন্ম ও বিকাশ দক্ষিণ স্পেনে। ছবি: হাফিংটন পোস্টফ্ল্যামেঙ্কোর জন্ম ও বিকাশ দক্ষিণ স্পেনে। স্পেনের মানুষজন, তাঁদের জীবনাচার ও সামাজিক রীতিনীতি সম্পর্কে অন্যান্য দেশের মানুষেরা কেমন ধারণা পোষণ করেন? দেশটির নাগরিকদের অনেকেই বলেছেন, বিদেশিদের কাছ থেকে নিজেদের সম্পর্কে অদ্ভুত সব ধারণার কথা শুনেছেন তাঁরা। এমনকি সিনেমা ও পত্রপত্রিকায়ও এসব ভুল ধারণার প্রতিফলন দেখা যায়। স্প্যানিশদের সম্পর্কে বহুল প্রচলিত এমন নয়টি ভুল ধারণার কথা তুলে ধরেছে হাফিংটন পোস্ট ।
সবাই ফ্ল্যামেঙ্কো জানে! 
না, স্প্যানিশমাত্রই ফ্ল্যামেঙ্কা নাচতে জানে না। ফ্ল্যামেঙ্কোর জন্ম ও বিকাশ দক্ষিণ স্পেনে। স্থানীয়ভাবে এই ঐতিহ্য জনপ্রিয় হলেও স্বভাবতই সেখানকার সবাই এই নৃত্য জানে না। আর তা ছাড়া ফ্ল্যামেঙ্কো স্পেনের নিজস্ব নৃত্যরীতির অনেকগুলোর একটা মাত্র। স্পেনের বিভিন্ন আঞ্চলিক নৃত্যরীতিগুলো স্থানীয়ভাবে খুবই জনপ্রিয়। এসবের মধ্যে মাদ্রিদে চোউতিস, গ্যালিসিয়ায় মুনেইরা, আরাগোনে ইয়োতা এবং কাতালোনিয়ায় সারদানা নৃত্যই স্থানীয় ঐতিহ্য।
ষাঁড়ের লড়াইয়ের ভক্ত সবাই!
ষাঁড়ের লড়াই স্পেনে দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য হলেও বাস্তবে স্পেনে ষাঁড়ের লড়াই নিয়ে তুমুল বিতর্ক আছে। সারা দেশের বিভিন্ন স্থানেই ষাঁড়ের লড়াইবিরোধী নানা সংগঠন আছে। কাতালোনিয়া এবং ক্যানারিস অঞ্চলে তো ষাঁড়ের লড়াই কঠোরভাবেই নিষিদ্ধ।
ঝাল মসলামিশ্রিত খিচুড়ির মতো খাবার পায়েইয়া। ছবি: হাফিংটন পোস্টপ্রতিদিনই পায়েইয়া খায় স্প্যানিশরা!
মোটেই না। ঝাল মসলামিশ্রিত খিচুড়ির মতো এই খাবার আদতে ভ্যালেন্সিয়া অঞ্চলের। ফলে ওই অঞ্চলের মানুষেরাই পায়েইয়া বেশি খায়। আর প্রত্যেক অঞ্চলেরই তো নিজস্ব খাদ্যরীতি আছে। তবে যদি সব স্প্যানিশের জাতীয় খাদ্য টাইপের কোনো কিছুর কথা বলতেই হয় তা হলো তরতিইয়া। ডিম, আলু আর পেঁয়াজ দিয়ে বানানো এই ওমলেট স্পেনজুড়ে খুবই জনপ্রিয়।
স্প্যানিশরা আলসে এবং দিনে ঘুমায়!
এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে, মধ্যাহ্নে খানিকটা সিয়েস্তা বা ভাত-ঘুমের রীতি নিয়ে স্প্যানিশরা খুবই গর্বিত। তাই বলে বিষয়টা এমন নয়, স্পেনের সবারই প্রতিদিন এই বিলাস কপালে জোটে। বাস্তবে স্পেনের জনসংখ্যার বড় অংশই সিয়েস্তার সময়ে কাজেকর্মে ব্যস্ত থাকে। যারা নিয়মিত সিয়েস্তায় অভ্যস্ত, তাদের বেশির ভাগই অবসরে যাওয়া মানুষজন কিংবা এখনো স্কুলে যাচ্ছে না এমন বাচ্চা-কাচ্চা।
রেড ওয়াইন, ফলের কুচি আর খানিকটা ব্র্যান্ডি মেশানো পানীয় স্যাংগ্রিয়া। ছবি: হাফিংটন পোস্টস্প্যানিশরা সারাক্ষণই স্যাংগ্রিয়া পান করে!
স্পেনে ঘুরতে গেলে বেশির ভাগ পর্যটকই হয়তো একবার রক্তলাল এই পানীয় সুধা পানের সুযোগ হারাতে চাইবেন না। রেড ওয়াইনের সঙ্গে ফলের কুচি আর খানিকটা ব্র্যান্ডি মেশানো হালকা মিষ্টি এই ককটেল স্পেন ও পর্তুগালে জনপ্রিয়ই বটে। তবে স্প্যানিশরা আসলে গ্রীষ্মকালেই স্যাংগ্রিয়া পান করে।
অনুজ্জ্বল, বাদামি চোখ ও কালো চুল!
সব স্প্যানিশই দেখতে পেনিলোপি ক্রুজ কিংবা আন্তোনিও ব্যান্দারাসের মতো না। সব স্প্যানিশই কালো চুলের বা বাদামি চোখেরও না। অনেকের চোখের মণিই নীল বা সবুজ। অনেকের চুলই বাদামি। আর সবার গায়ের রংও অন্য ইউরোপীয়দের তুলনায় অনুজ্জ্বল নয়।
স্পেনে জনসংখ্যার ১৩.২ শতাংশ নিয়মিত উপাসনায় অংশ নিয়ে থাকে ছবি: হাফিংটন পোস্টস্প্যানিশরা ধর্মকর্মে নিবেদিত প্রাণ!
আদতে বিষয়টা মোটেই এ রকম না। স্পেনে বহু ধর্মের মানুষ বসবাস করে এবং রাষ্ট্রীয় নীতি অনুসারে এটা একটা সেক্যুলার দেশ। আর মোট জনসংখ্যার ১৩ দশমিক ২ শতাংশই কেবল নিয়মিত উপাসনায় অংশ নিয়ে থাকে।
স্প্যানিশরা সারাক্ষণই উৎসব করে বেড়ায়!
এটা ঠিক যে স্প্যানিশরা খুবই উৎসবপ্রবণ জাতি। স্পেনে ১২ মাসে ১৩ পার্বণ যেন চলতেই থাকে। আর রাষ্ট্রীয় ক্যালেন্ডারেও নানান উৎসব ছুটির কমতি নেই। লা তমাতিনা বা টমেটো উৎসবের মতোই বহু বিচিত্র উৎসব চালু আছে স্পেনের বিভিন্ন অঞ্চলে। তবে ঐতিহ্যগতভাবে এসব উৎসব চালু থাকলেও আধুনিক যুগের ব্যস্ত নাগরিকদের এত সময় কই সারাক্ষণই উৎসব করার!
লা তমাতিনা বা টমেটো উৎসবের মতো বহু বিচিত্র উৎসব আছে স্পেনে। ছবি: হাফিংটন পোস্টস্পেনে সারা বছরই গরম থাকে!
ভূমধ্যসাগরের তীরে অবস্থিত স্পেনের আবহাওয়া তুলনামূলকভাবে যথেষ্ট ভালোই বলতে হবে। ইউরোপের অন্যান্য দেশের মতো এখানে শীতের তীব্রতা অতটা নেই। বসন্তকালের বেশির ভাগটা জুড়েই স্পেনের দক্ষিণাঞ্চলে বেশ ভালোই গরম পড়ে। তবে গ্যালিসিয়া, অস্তারিউস বা কান্তাবারিয়া অঞ্চলে গ্রীষ্মকালের অনেকটা জুড়েই বৃষ্টি হয়ে থাকে। আর মাদ্রিদ বা কাস্তিলা-লিওর মতো শীতপ্রধান এলাকায় শীতকালে বরফ আর তুষারপাতও দেখা যাবে।

স্বাধীন হওয়ার আগে আরেকবার ভাবুন: স্কটল্যান্ডকে ক্যামেরন



এসবিএন ডেস্ক : স্বাধীনতার পক্ষে রায় দেয়ার ব্যাপারে স্কটল্যান্ডের জনগণকে সতর্ক করে দিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। স্কটিশরা যাতে আসন্ন গণভোটে নাভোট দেয় সেজন্য সর্বশেষ প্রচেষ্টা হিসেবে সোমবার দেশটি সফরে গিয়ে এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন তিনি। কান্নাবিজড়িত কণ্ঠে দেয়া এক বক্তৃতায় তিনি বলেছেন, “একবার স্বাধীন হয়ে গেলে আর ফিরে আসার সুযোগ থাকবে না। স্কটল্যান্ডের ভোটাররা হ্যাভোট দিলে যুক্তরাজ্য ভেঙে যাবে এবং আমাদের পথ চিরদিনের জন্য আলাদা হয়ে যাবে।হ্যা ভোটের মাধ্যমে স্কটিশরা তাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে না বলেও হুঁশিয়ার করে দেন তিনি। সাবেক উপনিবেশবাদী দেশ ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আপনারা যদি আমাকে অপছন্দ করেন তাহলে আমি আর কোনোদিন এখানে আসবো না...কিন্তু আমাদের দেশটাকে ভেঙে ফেলবেন না।স্কটল্যান্ডের জনগণের কাছে দয়া ভিক্ষা করে তিনি আরো বলেন, “দয়া করে দুর্জনকে একথা বলার সুযোগ দেবেন না যে, স্কটল্যান্ডের গর্বিত জনগণ হওয়ার পাশাপাশি ব্রিটেনের গর্বিত নাগরিক হওয়ার যোগ্যতা আপনাদের নেই। আগাসী ১৮ সেপ্টেম্বর স্কটল্যান্ডের জনগণ ব্রিটেন থেকে আলাদা হয়ে যাওয়ার ব্যাপারে গণভোটে অংশ নেবে। এ নির্বাচনে জনগণ স্বাধীনতার পক্ষে রায় দিলে ২০১৬ সালের ২৪ মার্চ দেশটি ব্রিটেন থেকে আলাদা হয়ে যাবে। চলতি সপ্তাহে পরিচালিত একাধিক জনমত জরিপে দেখা গেছে, স্কটল্যান্ডের বেশিরভাগ জনগণ স্বাধীনতার পক্ষে মতামত দিয়েছেন। কিন্তু স্কটিশ সরকার অভিযোগ করেছে, দেশটির জনগণকে হ্যাভোট দেয়া থেকে বিরত রাখার জন্য কুটকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে ব্রিটেন। স্কটল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী অ্যালেক্স স্যালমন্ড সোমবার অভিযোগ করেছেন, ভয়ভীতি ও গুজব ছড়িয়ে স্কটিশদের স্বাধীনতার পক্ষে মত প্রকাশ থেকে বিরত রাখার নীতি নিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। স্যালমন্ড নিজে স্বাধীনতার পক্ষে মত প্রকাশ করে বলেছেন, স্বাধীনতা অর্জন করলে ব্রিটিশ সরকারের ব্যয়হ্রাস নীতি থেকে রক্ষা পাওয়ার পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী অনর্থক শত শত কোটি পাউন্ডের সামরিক ব্যয় থেকে বেঁচে যাবে স্কটল্যান্ডের জনগণ।

যোগাযোগ

Editor:Sahadul Suhed, News Editor:Loukman Hossain E-mail: news.spainbangla@gmail.com