এসবিএন ডেস্ক.বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির
দেশ জাপান প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বাংলাদেশে বিনিয়োগ আরো বাড়ানোর। এশিয়ার প্রভাবশালী এ
রাষ্ট্রটি জানিয়েছে, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে
ঢাকার পাশেই থাকবে টোকিও। সেই সঙ্গে গণতন্ত্র, শান্তি, মানবাধিকার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং সন্ত্রাসবাদ দমনে
একযোগে কাজ করবে বন্ধুপ্রতীম দুই দেশ। গতকাল শনিবার ঢাকায় বাংলাদেশ ও জাপানের
প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে এক যৌথ ঘোষণায় এ কথা বলা হয়। প্রধানমন্ত্রীর তেজগাঁওস্থ কার্যালয়ে গতকাল বিকাল ৪টায়
দুদেশের সরকারপ্রধানের মধ্যে এ বৈঠক শুরু হয়। শিমুল কনফারেন্স হলে প্রথম দুই দেশের
প্রধানমন্ত্রী একান্ত বৈঠক করেন। এরপর শুরু হয় মূল বৈঠক। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর
সঙ্গে ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, পানিসম্পদমন্ত্রী
ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ,
রেলমন্ত্রী মুজিবুল হকসহ ঊর্ধ্বতন
কর্মকর্তারা। অন্যদিকে সফররত প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন দেশটির ঊর্ধ্বতন
কর্মকর্তারা। বৈঠকোত্তর গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ
বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের উদ্দেশে বলেন, বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয়-বহুপক্ষীয় ও আঞ্চলিক ফোরামে জাপানের
সহযোগী হিসেবে থাকবে। বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়াসহ বৈশ্বিক উন্নয়নে গণতান্ত্রিক
প্রক্রিয়া অনুসরণকে গুরুত্ব দেবে। বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতা-পরবর্তী যে কোনো সময়ের চেয়ে বাংলাদেশ এখন
উত্তম বিনিয়োগের ক্ষেত্র। এখানে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা করা হচ্ছে।
বিশেষ করে জাপানের বিনিয়োগকারীরা এখানে সম্পূর্ণ নিরাপত্তা ভোগ করবেন। বর্তমান সরকারের নানা সাফল্যের চিত্র তুলে ধরে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানান,
২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ অবশ্যই
মধ্যম-আয়ের দেশে পরিণত হবে। তার সরকার সে লক্ষ্যেই কাজ করছে। এ ক্ষেত্রে জাপানের
সহযোগিতা প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করেন তিনি। যৌথ বিবৃতিতে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে এ অঞ্চলের শান্তি ও
নিরাপত্তা রক্ষায় বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে উল্লেখ করে বলেন, জাপান শুধু দক্ষিণ এশিয়া নয়, বৈশ্বিক উন্নয়নে অবদান রাখতে চায়। বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ
দমনে বাংলাদেশের অধিকতর সহযোগিতা কামনা করে তিনি জানান, এ ক্ষেত্রে তার দেশ অর্থনৈতিক সহায়তা দেবে। এ ছাড়া
বাণিজ্য-বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশকে অপার সম্ভাবনাময় উল্লেখ করে তিনি এখানে
জাপানি বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়ানোরও ঘোষণা দেন। এরপর জাপানি ব্যবসায়ী-বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে মতবিনিয়কালে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ দেশে আরও বিনিয়োগের আহ্বান জানান তাদের। তিনি বলেন, জাপানের বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশ সরকার অনুকূল
পরিবেশ সৃষ্টিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা জাপানিদের কাছ থেকে গাড়ি ও প্রযুক্তি খাতে
বিনিয়োগ আশা করি। এ ছাড়া সরকারি-বেসরকারি খাতে অবকাঠামোগত উন্নয়নকাজেও সফররত
ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যৌথ সংবাদ সম্মেলনের আগেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের হাতে উপহার হিসেবে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের
ছবিযুক্ত অ্যালবাম তুলে দেন। এ সময় জাপানের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের
প্রধানমন্ত্রীর হাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি খচিত সে দেশের বিশেষ
মুদ্রা উপহার-স্মারক হিসেবে তুলে দেন। এর আগে দুপুরে হোটেল সোনারগাঁওয়ে জাপান-বাংলাদেশ ইকোনমিক ফোরামের
বৈঠকে অংশ নেন শিনজো আবে। এ সময় তিনি বলেন, এশিয়ার
দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম শীর্ষ বিনিয়োগত্রে। জাপান এখানে বিনিয়োগ করতে
আগ্রহী, তবে বিনিয়োগ বাড়াতে পরিবেশকে আরও ব্যবসাবান্ধব করতে হবে। বাংলাদেশকে জাপান অনেক গুরুত্ব দেয় উল্লেখ করে শিনজো আবে
বলেন, আলোচনা সাপেক্ষে ৬০০ কোটি ডলার নয়, বাংলাদেশকে
দেওয়া জাপানের ঋণের পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। ব্যবসায়ীদের বড় ধরনের ভূমিকায় দুই
দেশের আলোচনার মধ্য দিয়ে আরও উন্নয়ন সম্ভব বলে উল্লেখ করেন জাপানি প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, জাপান বাংলাদেশকে অবকাঠামোগত
উন্নয়নের তাগিদ দিয়েছে। এ ক্ষেত্রেও বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে সর্বোচ্চ সহযোগিতা দিয়ে যাবে জাপান। এর আগে দুপুর ১টার দিকে দুই দিনের সফরে সস্ত্রীক ঢাকা
পৌঁছেন শিনজো আবে। তিনি জাপানের অল নিপ্পন এয়ারওয়েজের একটি বিমানে চড়ে ঢাকায় নামেন, তাতে উড়ছিল দুই দেশের পতাকা। বিমানবন্দরের ভিভিআইপি
টার্মিনালে জাপানের প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনা। এ সময় বিমান থেকে নামার পর দুটি শিশু আবে ও তার স্ত্রীর হাতে ফুলের তোড়া
তুলে দেয়। বিমানবন্দরেই শিনজো আবেকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়। পরে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মন্ত্রিসভার সদস্যসহ ঊর্ধ্বতন
সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে জাপানের প্রধানমন্ত্রীকে পরিচয় করিয়ে দেন। এ সময়
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, শিল্পমন্ত্রী
আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী ও
ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত শিরো সাদোশিমা উপস্থিত ছিলেন। বিমানবন্দরে লালগালিচা সংবর্ধনার পর জাপানি
প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহর ছুটে চলে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধের উদ্দেশে। দুপুর ২টায়
স্মৃতিসৌধে পৌঁছে ফুল দিয়ে বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন
করেন তিনি। পরে পরিদর্শন বইতে সই করে দুপুর সোয়া ২টায় রাজধানীর ধানম-িতে অবস্থিত
বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শনের উদ্দেশে সাভার ত্যাগ করেন শিনজো আবে। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠক
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে গতকাল সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। সন্ধ্যা ৬টা ২৫ মিনিটে বঙ্গভবনে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে জাপানের সহায়তা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী। এ সময় এই সফরের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য-বিনিয়োগসহ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছবে বলে আশা প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। আবে-রওশন এরশাদ বৈঠক এর আগে সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের সঙ্গে বৈঠক করেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী। বৈঠকে অত্যন্ত সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশে বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় বলে জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। সফরসঙ্গী ১৬৮ জন, আছেন বিশ্বখ্যাত বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের কর্তারাও সংক্ষিপ্ত ঢাকা সফরে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গী হয়েছেন ১৬৮ জন। এর মধ্যে তার জীবনসঙ্গী আকি আবেও রয়েছেন। রয়েছে ৫০ জনের একটি ব্যবসায়ী দল। তবে এ দলের বাইরেও দেশটির বিশ্বখ্যাত বেশ কয়েকটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানরাও রয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছেন মিতসুবিসির চেয়ারম্যান জোরোহিকো কোজিমা, তোশিবার চেয়ারম্যান মাসাশি মুরোমাচি, তোরে গ্রুপের প্রেসিডেন্ট আকিহিরো নিকাকা, ইতোচু গ্রুপের চেয়ারম্যান ইজো কোবায়াশি, মারুবিনি গ্রুপের চেয়ারম্যান তেরু আসাদা, নিপ্পন গ্রুপের চেয়ারম্যান জোহে সাসাকাওয়া, ওবেশি করপোরেশনের প্রেসিডেন্ট তোরু শিরাইশি এবং সুমিতোমোর প্রেসিডেন্ট মাসাকাজু তোকুরা উল্লেখযোগ্য। ইতোমধ্যে স্বনামধন্য এসব কোম্পানির কর্তাব্যক্তিরা ইতোমধ্যে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত কোম্পানির চেয়ারম্যানদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। দুই দেশের মধ্যে বিনিয়োগ ও ব্যবসায়িক পণ্যের লেনদেন প্রসারে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে একত্রে কাজ করার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তারা।
আজ ঢাকা ত্যাগ আজ সকালে রাজধানীর একটি ব্যাপ্টিস্ট মিশন পরিদর্শন করবেন আবে। এরপর যাবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইন্সটিটিউটের একটি অনুষ্ঠানে। সেখানে বক্তব্যও রাখবেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী। এরপর সাড়ে ১০টার দিকে শ্রীলংকার উদ্দেশে বাংলাদেশ ছাড়বেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে গতকাল সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। সন্ধ্যা ৬টা ২৫ মিনিটে বঙ্গভবনে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে জাপানের সহায়তা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী। এ সময় এই সফরের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য-বিনিয়োগসহ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছবে বলে আশা প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। আবে-রওশন এরশাদ বৈঠক এর আগে সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের সঙ্গে বৈঠক করেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী। বৈঠকে অত্যন্ত সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশে বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় বলে জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। সফরসঙ্গী ১৬৮ জন, আছেন বিশ্বখ্যাত বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের কর্তারাও সংক্ষিপ্ত ঢাকা সফরে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গী হয়েছেন ১৬৮ জন। এর মধ্যে তার জীবনসঙ্গী আকি আবেও রয়েছেন। রয়েছে ৫০ জনের একটি ব্যবসায়ী দল। তবে এ দলের বাইরেও দেশটির বিশ্বখ্যাত বেশ কয়েকটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানরাও রয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছেন মিতসুবিসির চেয়ারম্যান জোরোহিকো কোজিমা, তোশিবার চেয়ারম্যান মাসাশি মুরোমাচি, তোরে গ্রুপের প্রেসিডেন্ট আকিহিরো নিকাকা, ইতোচু গ্রুপের চেয়ারম্যান ইজো কোবায়াশি, মারুবিনি গ্রুপের চেয়ারম্যান তেরু আসাদা, নিপ্পন গ্রুপের চেয়ারম্যান জোহে সাসাকাওয়া, ওবেশি করপোরেশনের প্রেসিডেন্ট তোরু শিরাইশি এবং সুমিতোমোর প্রেসিডেন্ট মাসাকাজু তোকুরা উল্লেখযোগ্য। ইতোমধ্যে স্বনামধন্য এসব কোম্পানির কর্তাব্যক্তিরা ইতোমধ্যে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত কোম্পানির চেয়ারম্যানদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। দুই দেশের মধ্যে বিনিয়োগ ও ব্যবসায়িক পণ্যের লেনদেন প্রসারে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে একত্রে কাজ করার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তারা।
আজ ঢাকা ত্যাগ আজ সকালে রাজধানীর একটি ব্যাপ্টিস্ট মিশন পরিদর্শন করবেন আবে। এরপর যাবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইন্সটিটিউটের একটি অনুষ্ঠানে। সেখানে বক্তব্যও রাখবেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী। এরপর সাড়ে ১০টার দিকে শ্রীলংকার উদ্দেশে বাংলাদেশ ছাড়বেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে।